ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বাজেটের ব্যবহার হোক জনমুখী

সম্পাদকীয়
🕐 ৮:০৮ অপরাহ্ণ, জুন ১২, ২০২০

বাজেটের পক্ষে-বিপক্ষে বরাবরই নানান জনের নানান মত থাকে। থাকে ইতি ও নেতিবাচক আলোচনা-সমালোচনা। এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি পরিস্থিতিতে এসেছে বাজেট প্রণয়নকাল। করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতির ক্ষতি কাটিয়ে অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথ পরিক্রমা রচনায় ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। গত বৃহস্পতিবার পেশকৃত এ বাজেট বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান মেয়াদের দ্বিতীয় বাজেট। প্রস্তাবিত বাজেটে খরচের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা।

প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। বৃহস্পতিবার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে জাতীয় বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর আগে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর বাজেট প্রস্তাবে সই করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এ বিষয়ে গতকাল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে খোলা কাগজ।

করোনা মহামারির মধ্যে বিশাল এই বাজেট বাস্তবায়নে ঝুঁকি দেখছেন বিশ্লেষকরা। বাজেটের অর্থায়ন রাজস্ব ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরের মাধ্যমে রাজস্ব বাবদ ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং এনবিআর বহির্ভূত সূত্র হতে রাজস্ব প্রাক্কলন করা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া কর-বহির্ভূত খাত থেকে রাজস্ব ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা।

করোনা মহামারির মধ্যে বিপর্যস্ত অর্র্থনীতিতে এ রাজস্ব আদায় খুবই কঠিন। এবারও মোট বাজেটের ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে। এ ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে নেওয়া হবে ৮৪ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা; ব্যাংক বহির্ভূত জাতীয় সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে ২৫ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে নেওয়া হবে ৮০ হাজার ১৭ কোটি টাকা।

বাজেট বাস্তবায়নে স্বাস্থ্যখাতের উন্নতি তথা ভয়ঙ্কর করোনা প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় জরুরি স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি কর্মসংস্থান টিকিয়ে রাখা ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকা প্রণোদনার কথাও উল্লেখ করেছেন। তিনি বাজেট বাস্তবায়নে কৌশল-পত্রের কথাও তুলে ধরেন। বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা।

অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যবহৃত এই বিপুল অংকের বিনিয়োগ স্বাস্থ্য, কৃষি, বিদ্যুৎ, যোগাযাগ ও অগ্রাধিকারের মেগা প্রকল্পসহ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাজেট বাস্তবায়নে প্রধান সমস্যা অর্থায়ন। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হলেও সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে পুনঃনির্ধারণ করা হয় ৩ লাখ ৫০০ কোটি টাকা। চলতি বছরের ১০ মাসের রাজস্ব আদায় সে লক্ষ্যের ধারে কাছে নেই।

চলমান কঠিন সময়ে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, বাজেটের ব্যবহার যেন গণমুখী হয়। সাধারণ মানুষের জীবন যেন কঠিন কোনো ফাঁদে না পড়ে। করোনাভাইরাসের কারণে সাধারণ মানুষ এমনিতেই কঠিন সময় পার করছে। বাজেট মানে যদি হয় মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতি সেটা কারো জন্যই সুফল বয়ে আনবে না।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper