স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সচেতন থাকুন
সম্পাদকীয়
🕐 ৮:১৪ অপরাহ্ণ, মে ৩০, ২০২০
কথায় আছে স্বাস্থ্যই সুখের মূল। এ কথা আরো বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে বর্তমানে। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে প্রযোজ্য স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রয়োগ করা না হলে আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর জনগণের সচেতনতা ও সতর্কতার অভাবে সম্ভাব্য করোনা রোগী বৃদ্ধি পেয়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর প্রচ- চাপ তৈরি হতে পারে।
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশে এ কথা বলা হয়েছে। কমিটির সভায় করোনা বিষয়ে কিছু সুপারিশ করা হয়। এই সুপারিশমালার সার সংক্ষেপে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ মেনে চলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে গতকাল খোলা কাগজে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিষয়ে গঠিত কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ এবং সদস্য সচিব অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা স্বাক্ষরিত সুপারিশমালায় বলা হয়, কোভিড-১৯ একটি সংক্রামক রোগ, যা হাঁচি-কাশি ও সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। জনসমাগম এ ভাইরাসের বিস্তারের ঝুঁকি বাড়ায়। সংক্রমণের হার উল্লেখযোগ্য ও সুনির্দিষ্টভাবে না কমার আগে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চালু করলে রোগের হার বাড়ার আশঙ্কা থাকে। জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি এ বিষয়ে গত ৭ মে পরামর্শ দিয়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রযোজ্য বিধি বিধানসমূহ সঠিক পদ্ধতিতে প্রয়োগ না করে শিথিল করা হলে রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর প্রচ- চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সুনির্দিষ্টভাবে কোভিড-১৯ রোগে হাইড্রোক্সি-ক্লোরোকুইন ওষুধ ব্যবহারের ঝুঁকি সম্পর্কে নির্দেশনা দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে এ ওষুধের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসার গাইডলাইনে এ ওষুধ না রাখার পরামর্শ দিচ্ছে। আইভারমেকটিন, কনাভালোসেন্ট প্লাজমা ও অন্যান্য অননুমোদিত ওষুধ কেবল সুনির্দিষ্টভাবে অনুমোদিত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বাইরে ব্যবহার না করার সুপারিশ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় এ সমস্ত ওষুধ বা ব্যবস্থা চিকিৎসা বা প্রতিরোধে সাধারণ মানুষের জন্য ব্যবহার না করার পরামর্শ দিচ্ছে।
ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা মন্ত্রণালয় কোভিড-১৯ ও অন্যান্য রোগীর চিকিৎসা একই হাসপাতালে পৃথক পৃথক ব্যবস্থায় করার নির্দেশনা দিয়েছে। জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি এ সিদ্ধান্ত সঠিক মনে করে। তবে এ ব্যাপারে প্রশাসনিক, সাংগঠনিক, জনবল ও সরঞ্জামের বিশেষ প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালকে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বলা হয়েছে, দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কোভিড-১৯ এবং নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসা সেবা ও নমুনা পরীক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা দেশের কোভিড-১৯ চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা পর্যালোচনা করে একই হাসপাতালে কোভিড এবং নন-কোভিড রোগীদের ভিন্ন ভিন্ন অংশে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া নিশ্চিত করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। সময়টা কঠিন। সবাইকে নিজ দায়িত্বে নিজের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখতে হবে। সাধারণ ছুটি আর না বাড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন করোনা আরো জোর নিয়ে ফিরে আসতে পারে। রোগকে পরাস্ত করেই এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় হোক আমাদের সবার।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228