আম্পান তা-বে ক্ষত শুশ্রƒষার পদক্ষেপ কাম্য
সম্পাদকীয়
🕐 ৭:৫৬ অপরাহ্ণ, মে ২২, ২০২০
প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেন এ তল্লাটের মানুষের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিগত বছরগুলোতে প্রায়ই নানা নাম নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে ঘূর্ণিঝড়। উপকূলীয় অঞ্চলসহ নানা জায়গায় এঁকে দিয়ে গেছে ক্ষতচিহ্ন। সংশ্লিষ্ট এলাকার জীবনবাদী মানুষ আবার উঠে দাঁড়িয়েছে। গতি মিলিয়েছে চলমান সময়ের সঙ্গে। এবার করোনা মহামারির মধ্যেই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ কমপক্ষে ১২ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
এর তা-বে উপকূলসহ ২৬টি জেলায় অন্তত এক হাজার ১০০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। শক্তিশালী এ ঝড় কেটে যাওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার সচিবালয় থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান চার মন্ত্রণালয়ের দেওয়া ক্ষয়ক্ষতির এ পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।
গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, শক্তিশালী এ ঝড়ে ভেঙে পড়ে বহু গাছপালা, ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিদ্যুৎ সংযোগ ও ঘরবাড়ি। জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয় উপকূলীয় এলাকার বাঁধ, ভেসে যায় মাছের ঘের। নষ্ট হয় জমির ফসল। ঘূর্ণিঝড়ে দুই কোটি ২০ লাখের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। তবে ঝড়ের তীব্রতা কমার পর বৃহস্পতিবার ভোর থেকে দুর্গত এলাকায় সংযোগ পুনঃস্থাপনের কাজ শুরু করে বিতরণ সংস্থাগুলো। বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে চারটি কমিটি করেছে সরকার। ক্ষতিগ্রস্তদের গতকাল থেকেই ঘর নির্মাণ, অর্থ ও ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ তথ্য জানান।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান গত বুধবার দুপুরের পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঘাত হানে। পরে সন্ধ্যারাত থেকে বাংলাদেশের উপকূলেও শুরু হয় তা-ব। এটি সারারাত ঘূর্ণিঝড় রূপে থেকেই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে তা-ব চালিয়েছে। সারারাত তা-ব চালানোর পর গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার পর শক্তি ক্ষয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়। ওই সময় স্থল নিম্নচাপ হিসেবে রাজশাহীতে অবস্থান করে। তা-বের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী এনামুর বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, পানিসম্পদ, কৃষি মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক হিসাব দিয়েছে। প্রায় এক হাজার ১০০ কোটি টাকা ক্ষতির প্রাথমিক হিসাব আমরা পেয়েছি। অন্য যেসব মন্ত্রণালয় আছে, তারাও রিপোর্ট দিয়েছে, তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ তারা দেয়নি। সারা দেশে মোট ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানতে অন্তত সাত দিন সময় লাগবে।
যাদের মৃত্যুর খবর এসেছে তাদের বেশিরভাগই ঝড়ে গাছ বা ঘর চাপা পড়ে মারা গেছেন। এর মধ্যে পিরোজপুর ও যাশোরে তিনজন করে, পটুয়াখালীতে দুজন এবং ঝিনাইদহে, সাতক্ষীরা, ভোলা ও বরগুনায় একজন করে মারা গেছেন। উপকূলসহ ২৬ জেলা বিধ্বস্ত হয়েছে, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন দুই কোটি গ্রাহকের। দ্রুত সহায়তা দিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন দুর্ঘটনার পরপরই। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার অবকাঠামো বিনির্মাণের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মানুষের পাশে দাঁড়ানোও সময়ের দাবি। সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানরাও বাড়িয়ে দিতে পারেন মানবতার হাত। একদিকে করোনা আমাদের কঠিন বিপদে ফেলেছে, অন্যদিকে আম্পান এসেছে মৃত্যুদূত হয়ে এ অবস্থায় আমাদের ‘মানুষ’ পরিচয়টিই ঊর্ধ্বে তুলে ধরা ছাড়া বিকল্প নেই!
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228