ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শিল্পাঞ্চলে প্রণোদনা বাস্তবায়ন করুন

সম্পাদকীয়
🕐 ৬:৫৮ অপরাহ্ণ, মে ০৮, ২০২০

প্রয়োজনীয় প্রণোদনার অভাবে থমকে আছে দেশের শিল্পাঞ্চল। মূলধন ভাঙতে ভাঙতে সেটা তলানিতে এসে ঠেকেছে অনেক উদ্যোক্তার। এর আঁচ লেগেছে বগুড়ার হালকা ও কৃষি শিল্পাঞ্চলেও। দেশের কৃষি শিল্পপণ্যের জন্য বিখ্যাত বগুড়ায় প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার শিল্প উৎপাদন হত। বর্তমানে ব্যাংক ঋণ, শ্রমিকদের বেতন ভাতা আর পরিবারের ভরণ-পোষণের চিন্তা ভাবিয়ে তুলেছে ব্যবসায়ী ও শিল্প মালিকদের। সরকার প্রণোদনা ঘোষণা করলেও এখন পর্যন্ত কানাকড়িও পায়নি এখানকার শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। এ সংক্রান্ত কোনো তথ্যও নেই প্রশাসন, ব্যাংক এবং শিল্প মালিক ও সংশ্লিষ্টদের কাছে। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। বগুড়া ফাউন্ড্রী শিল্পের ব্যবসায়ী ও বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল মালেক জানান, প্রতিদিন বগুড়ায় গড়ে কমপক্ষে ৩০০ মেট্রিক টন উৎপাদন হত। ব্যবসার অনুকূল সময়ে এল করোনার থাবা। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে দ্রুত প্রণোদনার অর্থ বিতরণ প্রয়োজন।

ফোরাম অব বগুড়া এগ্রো মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড প্রসেসিং জোনের (ফামপজ) সভাপতি গোলাম আযম টিকুল বলেন, বাংলাদেশকে প্রযুক্তিনির্ভর করা যায়নি বলেই করোনাকালীন সমস্যা প্রকট হয়ে উঠেছে কৃষিক্ষেত্রেও। এমতাবস্থায় প্রণোদনার অর্থ দ্রুত দেওয়ার বিকল্প নেই। সর্বনিম্ন ২ থকে ৩ শতাংশ সুদে ৪ বছর মেয়াদি ঋণ দিলে ক্ষতি পুষিয়ে সামনে এগুনো সম্ভব হবে। বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প মালিক সমিতি বগুড়া জেলা সভাপতি আলহাজ মাহবুবুর রহমান বলেন, শুধু কৃষি বা হালকা শিল্প নয় বরং এর প্রভাব পড়েছে পুরো শিল্পকারখানায়। বগুড়া জেলায় ৩৫০টি মুদ্রণ কারখানা রয়েছে, যেখানে জড়িত প্রায় ৩৫ হাজার শ্রমিক। উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় ব্যবসার পুঁজিতে হাত পড়েছে। প্রণোদনার টাকা পাওয়া ছাড়া শিল্প কারখানাগুলোর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই।

বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির মতে, বর্তমানে বগুড়া বাংলাদেশের বৃহত্তম কৃষি-সরঞ্জাম শিল্প শহর। দেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলোর সঙ্গে সুপ্রতিষ্ঠিত সড়ক যোগাযোগের কারণে উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রধান ব্যবসায়িক কেন্দ্র বগুড়া। দেশের মোট উৎপাদিত কৃষি যন্ত্রপাতি, ছোট ইঞ্জিন এবং যন্ত্রপাতি ক্ষেত্রগুলোর প্রায় ৮০ শতাংশই হচ্ছে বগুড়ায়। বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান মিলন বলেন, প্রণোদনা যেটাই আসুক, তারচেয়ে বড় কথা নিজের যা আছে, আগে সেটুকু নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত। বগুড়া জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মাদ বলেন, এখন পর্যন্ত শিল্প ক্ষেত্রে প্রণোদনার বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। একই রকম কথা বলেন আরও অনেকেই।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) বগুড়ার শিল্পনগরী কর্মকর্তা একেএম মাহফুজুর রহমান জানান, অনুকূল পরিবেশের অভাবে সঠিক উৎপাদনে যেতে পারছেন না শিল্প মালিক ও সংশ্লিষ্টরা। বিগত অর্থবছরে শুধু বিসিক শিল্প এলাকা থেকেই সরকার রাজস্ব পেয়েছে ১৬৩ কোটি টাকা। এখন প্রণোদনাই এখানে এই শিল্পাঞ্চলে প্রাণ এনে দিতে পারে। এসব শিল্পকারখানার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরি। সঙ্গে রয়েছে প্রত্যেকের পরিবারের জীবন-জীবিকার প্রশ্নও। বাস্তবতা উপলব্ধি করে সংশ্লিষ্টরা দ্রুত প্রণোদনা অর্থ সংশ্লিষ্টদের হাতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবেন বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper