ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক

সম্পাদকীয়
🕐 ৬:১৯ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৩০, ২০২০

এবছর এমন এক সময়ে এসেছে মে ডে বা বিশ^ শ্রমিক দিবস যখন এটি ‘পালনের’ সুযোগ নেই! শ্রমিকরা হাতপা গুটিয়ে বাসা-বাড়িতে বসে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। ক্ষুধা তো লকডাউন কিংবা স্বাস্থ্যঝুঁকি মানে না। এই মানা না মানার মধ্য দিয়েই এগিয়ে চলেছে টালমাটাল বিশ^। বাংলাদেশের সব শ্রেণির শ্রমিক একপ্রকার অবরুদ্ধ জীবনযাপন করছেন। বর্তমান সংশয়াচ্ছন্ন আর ভবিষ্যতে কী হবে এমন কুয়াশা বিরাজ করছে সবার মনে। এর মধ্যেই আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বলেছে, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে কর্মঘণ্টা কমে গেছে। পরিস্থিতি যা তাতে প্রায় ১৬০ কোটি মানুষ জীবিকা হারানোর ঝুঁঁকিতে আছে। এই সংখ্যা মোট কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেক।

করোনাভাইরাস নিয়ে গত বুধবার আইএলও তাদের পর্যবেক্ষণের তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিকে যে পরিমাণ কর্মঘণ্টা কমেছে, তা আগে যা ধারণা করা হয়েছিল তারচেয়েও বেশি। গত বছরের শেষ প্রান্তিকের (প্রাক-সংক্রমণের সময়) চেয়ে সাড়ে ১০ শতাংশ অবনতি আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা প্রায় সাড়ে ৩০ কোটি পূর্ণকালীন কর্মসংস্থানের (সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টা কাজ ধরে) সমান। পূর্ববর্তী অনুমান ছিল ৭ দশমিক ৭ শতাংশ কমার অর্থাৎ সাড়ে ১৯ কোটি পূর্ণকালীন কর্মীর সমতুল্য। বর্তমানে পরিস্থিতি সব বড় আঞ্চলিক গোষ্ঠীর জন্য আরও খারাপ হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র এই বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১২ দশমিক ৪ শতাংশ কর্মঘণ্টা হারাবে। ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া হারাবে ১১ দশমিক ৮ শতাংশ কর্মঘণ্টা।

মহামারির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটের ফলে অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির প্রায় ১৬০ কোটি শ্রমিকের জীবিকা নির্বাহ ঝুঁকিতে পড়বে। মূলত করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে দেশে দেশে নেওয়া লকডাউন পদক্ষেপের কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। এই সংকটের প্রথম মাসে বিশ্বব্যাপী অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকের আয় কমেছে ৬০ শতাংশ, যা আফ্রিকার দেশের ক্ষেত্রে ৮১ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ২১ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ায় ৭০ শতাংশ। আইএলওর বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পটিআইনেন বলেন, জনসংখ্যার বিভিন্ন অংশ যেমন নারী, যুবক, বয়স্ক শ্রমিক, অভিবাসী ও চাকরিজীবী ব্যক্তিরা কোভিড-১৯ মহামারির কারণে আলাদাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তরুণ জনগোষ্ঠী এমনিতে উচ্চ বেকারত্বের হারে রয়েছে, তারা জীবিকা হারাতে বসেছেন।

বয়স্ক কর্মীরা কর্মঘণ্টা কমে যাওয়ায় বেকারত্বের ঝুঁকিতে আছেন। নারীরা সামাজিক সুরক্ষার অভাবে রয়েছেন। স্ব-কর্মসংস্থানের কর্মীরা প্রচলিত সামাজিক সুরক্ষা প্রক্রিয়া দ্বারা সুরক্ষিত নন। বিকল্প আয়ের উৎস ব্যতীত এই শ্রমিক এবং তাদের পরিবারগুলোর টেকার কোনো উপায় থাকবে না বলে মনে করে আইএলও। এ অবস্থায় কর্মীকে সহায়তা দেওয়ার জন্য জরুরি, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অনুযায়ী এবং নমনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আইএলও। এ অবস্থায় বাংলাদেশও বড় ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েক লক্ষ প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফিরেছেন। ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন অনেকে। এই শ্রমিকদের অধিকাংশ হয়ত পুরনো কাজে ফেরত যেতে পারবেন না। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের বিকল্প কর্মসংস্থান ও উত্তরণের উপায় খুঁজে বের করতে হবে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper