‘মশার গান শুনতে চাই না’
সম্পাদকীয়
🕐 ১:১৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০১, ২০২০
বিশ্ববাসীর মতো অভিন্ন পরিণতি বাংলাদেশেরও। করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়ছে দেশ। এ লড়াই চালিয়ে যেতে দিতে হচ্ছে চড়া মাশুল। এর মধ্যেই আবার সৃষ্টি হচ্ছে ডেঙ্গু ঝুঁকি। গত মঙ্গলবার দেশের ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আয়োজিত ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে হুঁশিয়ারি দেন। মশা নিয়ন্ত্রণে মেয়রদের সক্রিয় হওয়ার কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো দুর্নীতি হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। দুঃসময়ে কেউ সুযোগ নিলে, কোনো অভিযোগ পেলে তাকে ছাড়া হবে না, বিন্দু পরিমাণ অনিয়ম সহ্য করা হবে না। ভিডিও কনফারেন্সে জেলা প্রশাসকরা তাদের নিজ নিজ জেলার প্রস্তুতির অবস্থা প্রধানমন্ত্রীকে জানান।
খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টা থেকে দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টার ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী একাধিক মন্ত্রী, বিভাগীয় কমিশনার, সিটি মেয়রসহ সরকার পরিচালনায় জড়িত গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে বর্তমান করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি প্রতিরোধে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, পরিস্থিতি কী এবং সামনের দিনে কী করতে হবে সে সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে দরিদ্রদের সহযোগিতায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বিত্তবানদের প্রতি সহযোগিতার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলাম। অনেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কেউ দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে তা হবে দুঃখজনক।
ছুটি ঘোষণার কারণে দিনমজুর ও খেটেখাওয়া মানুষের সমস্যা হচ্ছে। কৃষক, চা শ্রমিক, হিজড়া, বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ বেশি কষ্ট পাচ্ছে। তারা দৈনন্দিন কাজে যেতে পারছে না। তাদের বাঁচিয়ে রাখা আমাদের সামাজিক কর্তব্য। সেখানে ১০ টাকা কেজি চালসহ নানা সহযোগিতা করা হয়েছে। তাদের কাছে সাহায্য ও খাদ্যদ্রব্য পাঠাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি সবাইকে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ড অনুযায়ী তালিকা করতে হবে। সেই অনুযায়ী সবাই যেন সাহায্য পায়। কেউ যেন বাদ না পড়ে। আমাদের দেশটা ছোট কিন্তু জনসংখ্যা বিশাল। এরপরও আমরা মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পেরেছি। সেজন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ পর্যায়ে রয়েছে।
ভিডিও কনফারেন্সে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও দুই সিটি করপোরেশন মেয়রসহ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কাল রাতে যখন ঘুমাতে গেলাম তখন দেখলাম মশারা সংগীত চর্চা করছে। মশার গান শুনলাম। মশা গুনগুন করে কানের কাছে গান গাচ্ছিল। অর্থাৎ মশার প্রাদুর্ভাব কিন্তু আস্তে আস্তে শুরু হবে। তারপর আসবে ডেঙ্গু। তো এই ব্যাপারে কিন্তু এখন থেকে আমাদের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে এবং এখন থেকে আমাদের প্রত্যেক নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বলব, মশার হাত থেকে দেশের মানুষকে বাঁচাতে এখন থেকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। করোনার ভয়াবহতার সময়েও প্রধানমন্ত্রীর এমন সচেতনতা অবশ্যই প্রশংসাযোগ্য। আমরা প্রত্যাশা করব, মেয়রসহ সংশ্লিষ্টরা মশার আগ্রাসন রোধে সত্বর ব্যবস্থা নেবেন।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228