করোনা হাসপাতাল নির্মাণ ত্বরান্বিত হোক
সম্পাদকীয়
🕐 ১:২৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩০, ২০২০
বিশ্বজুড়ে বড় আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস। এ মহামারি থেকে রক্ষা পেতে বাংলাদেশ সরকারও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন শিল্প গ্রুপও। কিন্তু ইতিপূর্বে দেখা গেছে, স্থানীয় জনতার বাধার মুখে সরকার রাজধানীর একটি এলাকায় কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করতে পারেনি। উদ্যোগ নিয়েও পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। সর্বশেষ আকিজ গ্রুপ এগিয়ে এসেছে করোনা হাসপাতাল নির্মাণে।
এখানেও জনতা-নেতার বাধা! যেখানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহযোগিতা করার কথা দেশ-জনতার স্বার্থে, উল্টো এই ধরনের প্রতিবন্ধকতা কোনো অবস্থাতেই কাম্য নয়। উটকো বাহাদুরি দেখানো যতটা সহজ, রোগাক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো ততটা সহজ নয়। এ বন্ধ্যাবস্থায়ও মিলল একটি সুখবর। রাজধানীর মহাখালীতে করোনা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা এসেছে। ২০১৩ সালে নির্মাণকাজ শেষ হলেও ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে চালু হয়নি মহাখালী ডিএনসিসি মার্কেট। তাই এবার করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসায় এ মার্কেটটিতেই রূপান্তরিত করে তিন হাজার শয্যার হাসপাতাল করতে চায় সরকার।
সবকিছু ঠিক থাকলে শিগগিরই এই হাসপাতাল তৈরি হবে। বৈশ্বিক এই মহামারিকে বাংলাদেশে মোকাবেলায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বড় বড় হাসপাতালগুলোর সঙ্গেও আলোচনা চলছে বলে নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। মার্কেটটি করা হয় কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে স্থানান্তরের উদ্দেশ্যে। তবে কয়েক দফা বিজ্ঞপ্তি দিয়েও পাওয়া যায়নি দোকান বরাদ্দের আবেদন। বর্তমানে মার্কেটটি নিয়ে বিপাকে পড়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। বারবার পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে, রাস্তায় বিলবোর্ড টানিয়েও ব্যবসায়ীদের ওই মার্কেটের বিষয়ে আগ্রহী করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় তাই আপাতত করোনা সংক্রমণের চিকিৎসা কেন্দ্র হতে যাচ্ছে এই স্থাপনা। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে তিন হাজার শয্যার হাসপাতালে রূপান্তর করা হবে এই মার্কেট।
রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে ২০০ ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা যোগ করে করোনা রোগীদের চিকিৎসা কেন্দ্র করার পরিকল্পনার কথা জানানো হয়। একই সঙ্গে ঢাকার বাইরে বড় বড় চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে রূপান্তরের পরিকল্পনা কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল) আমিনুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা কুর্মিটোলা হাসপাতালকে খুব দ্রুত কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত করব। এটিকে এক হাজার বেড বানিয়ে ফেলব। এছাড়া দুইশ ভেন্টিলেটর বসানো হবে। মহাখালীতে ডিএনসিসির যে মার্কেট আছে, আমরা তা নিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছি।
বর্তমানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে। নির্ধারণ করা হয়েছে আরও সাতটি হাসপাতাল, যেখানে শুধু করোনা রোগীদেরই চিকিৎসা দেওয়া হবে। আর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল এবং সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে কিছু অংশ করোনা রোগীদের চিকিৎসায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা অবশ্যই সুখবর। শিল্প গ্রুপগুলো এতে সদিচ্ছা প্রকাশ করছে এটাও ইতিবাচক দিক। কিন্তু অবিবেচকের বাধায় মহৎ কোনো কাজ যেন থেমে না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের। সবার আগে মানুষের স্বাস্থ্য, জীবন। সেখানে মাতব্বরি অপ্রত্যাশিত। যত দ্রুত করোনার হাসপাতালগুলো চিকিৎসা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত, ততই দেশের জন্য মঙ্গল।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228