ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কাজ হারানো শ্রমজীবীদের দিকে সহায়তার হাত বাড়ান

সম্পাদকীয়
🕐 ৬:২০ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৮, ২০২০

করোনা ভাইরাস কমবেশি সবাইকেই বিপাকে ফেলেছে বিশ্বব্যাপী। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শ্রমজীবী মানুষরাই পড়েছে বেশি সমস্যায়। যারা দিন আনে দিন খায়, তাদের জন্য এটা অগ্নিপরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারি নির্দেশনায় টানা ১০ দিনের ছুটির কারণে স্থবির দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা-। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধপ্রায়। শপিং মল থেকে শুরু করে গলির দোকান সবই বন্ধ। গার্মেন্টসসহ শিল্প, কল-কারখানার চাকা ঘুরছে না, বন্ধ রয়েছে সব ধরণের গণপরিবহন। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে দেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবনে। বিভিন্নখাত মিলিয়ে শ্রমজীবি মানুষের সংখ্যা প্রায় ৬ কোটি ৭০ লাখ। ভয়ঙ্কর করোনা ভাইরাস রোধে লকডাউন শুরু হওয়ায় এসব মানুষের জীবন-জীবিকা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। সরকার রপ্তানিমুখী শিল্পের শ্রমিকদের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা ও অন্যান্য শ্রমজীবি মানুষের জন্য কম দামে খাদ্য পণ্য সরবরাহ করার ঘোষণা দিয়েছে। এ ঘোষণা দেওয়ার মধ্য দিয়ে রপ্তানিমুখী শিল্পের শ্রমিকদের মজুরি ভাতার নিশ্চিত করা হলেও দিশা পাচ্ছে না অন্য খাতের শ্রমিকরা।

গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিপুল সংখ্যক শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে রপ্তানিমুখী শিল্পের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য সরকার পাঁচ হাজার কোটি টাকা ঘোষণা করেছে। গার্মেন্টস কারখানা মালিকদের শ্রমিকদের বেতন দেওয়া নিয়ে অস্বস্তিকর অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার মধ্য দিয়ে তা কিছুটা দূর হয়েছে। ঘোষণার মধ্যে সকল রপ্তানিকারক শিল্পের জন্য বলা হলেও এখন পর্যন্ত এ টাকা নেওয়ার জন্য তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। কারখানা মালিকরা এ টাকা দিয়েই এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার কথা ভাবছেন। অন্য খাতের শ্রমিকদের বেতন নেওয়ার এখনি কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। লকডাউনের ফলে কৃষি শ্রমিক বাদে আর সবাই কাজ হারিয়েছেন।

রপ্তানি খাতের বাইরে হোটেল-রেস্টুরেন্ট, বিমান-পর্যটন, পরিবহন, দিনমজুর, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ শতাধিক খাতে যে সব শ্রমিক কর্ম হারিয়েছে এ সব শ্রমিকের খাওয়ার পরার ব্যাপারে এখনো কোন সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা নেই। এসব শ্রমজীবি মানুষও জানে না রোজগার হারানোর পর তাদের দিন কীভাবে চলবে। সরকার হতদরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্য সরবরাহের যে কথা ভাবছে তা বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন। কিন্তু কীভাবে কত মানুষকে খাদ্য সরবরাহ করবে সে পথনকশা তাদের কাছে এখনো নেই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুসারে নিম্নআয়ের মানুষকে কী ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক গণমাধ্যমকে জানান, নিম্নআয়ের মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য তারা চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য প্রদান করবেন। এছাড়াও প্রয়োজনে অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এখন পর্যন্ত জেলা পর্যায়ে অর্থ পৌঁছায়নি।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জেলা প্রশাসকদের কাছে থাকা তালিকা অনুযায়ী খাদ্য বিতরণ শুরু হবে। কিন্তু করোনা ভাইরাস রোধে লকডাউনের ফলে কর্মহারা মানুষের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হবে। তাছাড়া যারা ঢাকা বা অন্য বড় শহর বা শিল্পাঞ্চল থেকে নিজ এলাকায় গেছেন তারাও কর্মহীন ও আয়হীন হয়ে গেছেন। তাদের বিষয়টিও সরকারকে মাথায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ অবস্থায় সমাজের ধনাঢ্য ব্যক্তিসহ সংশ্লিষ্টরা নিম্ন আয়ের মানুষের দিকে হাত বাড়াতে পারেন। যারা কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন না, তাদের পাশে দাঁড়ানোও সময় এবং মানবতার দাবি।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper