ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

পোশাক শিল্পে অনিশ্চয়তা বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিন

সম্পাদকীয়
🕐 ১০:০৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ০৮, ২০২০

সবচেয়ে বেশি মুনাফা অর্জনকারী খাত পোশাক শিল্পকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে একধরনের অনিশ্চয়তা। এটার নেতিবাচক প্রভাব পড়া শুরু হলেও দেশের শ্রমবাজারেও একধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। লাখ লাখ শ্রমিক ও উদ্যোক্তাদের পড়তে হবে দোটানায়। জীবিকা সংকটের আশঙ্কাও প্রকট হতে পারে। দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক। একের পর এক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাব পড়েছে পোশাক খাতে, কমছে রপ্তানি। টাকার অতি মূল্যায়নে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে যাওয়া এবং সর্বশেষ ইউরোপীয় ইউনিয়নে মৃদু মন্দার কারণে রপ্তানিতে ধাক্কা লাগে। সর্বশেষ করোনা ভাইরাস আঘাত হেনেছে। রপ্তানিকারকরাও পাচ্ছেন কূল-কিনারার হদিশ। সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রপ্তানি কমেছে ৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে জুলাই-ফেব্রুয়ারি আট মাসে কৌশলগত রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ২৪৩ বিলিয়ন ডলারের। কিন্তু রপ্তানি হয়েছে ২১ দশমিক ৮৪৮ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক।

শীর্ষ ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে বলেন, রপ্তানির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। বছরের শুরু থেকেই রপ্তানি হ্রাস শুরু হয়। সে সময় আমরা বলেছিলাম জানুয়ারির পর রপ্তানি বাড়তে শুরু করবে এবং এক পর্যায়ে তা স্বাভাবিক হয়ে আসবে। সে সময় সামনে সমস্যা ছিল আমাদের স্থানীয় মুদ্রার শক্তিশালী অবস্থান। বিপরীতে ভারত, পাকিস্তান, ভিয়েতনামসহ প্রতিযোগী দেশগুলো নিজেদের মুদ্রার মান কমিয়ে রপ্তানির কার্যদেশগুলো নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। ইউরোপেও অর্থনৈতিক মৃদু মন্দা শুরু হয়েছিল। এর ফলে রপ্তানি কমে আসার চিত্র যেমন ছিল, তেমনি আশার আলোর ঝিলিক ছিল জানুয়ারি মাসে এ মন্দা কেটে গিয়ে রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু এরই মধ্যে করোনা ভাইরাসের হানা!

অন্যদিকে বিশে^র বিমান পরিচালনা সংস্থার হিসাবে, বিশ্বজুড়ে বিমানের যাত্রী ৩৫ শতাংশ কমেছে। এর প্রভাব পড়েছে ইউরোপের বাজারে। সেখানকার বাজারে বিক্রি কমে গেছে। করোনা ভাইরাসের আক্রমণের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে মানুষের চলাচলের সঙ্গে ক্রেতা কমে যাবে, যার ভয়াবহ প্রভাব পড়বে তৈরি পোশাকে। এ অবস্থায় তৈরি পোশাক রপ্তানি পরিস্থিতি কোন পথে যাবে এর কিছুই বলা যাচ্ছে না। নীট তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি বলেন, রপ্তানিকারকরা এক অনিশ্চয়তার মধ্যে বসবাস করছি। করোনা ভাইরাসের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি বৈঠক বন্ধ করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে সুইস একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকও।

সংশ্লিষ্টদের মতে- করোনা ভাইরাস যেভাবে বিস্তার ঘটছে তাতে ইউরোপ আমেরিকার বাজারের ক্রেতারা পোশাক কেনা বন্ধ করে দিতে পারে। চীন থেকে তৈরি পোশাকের একটি অংশ কার্যাদেশ বাংলাদেশে চলে আসছিল। এটা চীনের তৈরি পোশাকের উৎপাদন কমিয়ে দেওয়ার কারণে যেমন, তেমনি করোনা ভাইরাসের কারণেও কিছু কার্যাদেশ বাংলাদেশমুখি হচ্ছিল। এ সম্ভাবনার পাশাপাশি তৈরি পোশাকের কাঁচামালের চীন নির্ভরতার কারণে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। অতীতেও বাংলাদেশ বিভিন্ন সংকট-দুর্যোগ পার করে এসেছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতেও বাস্তবমুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে সমাধান বেরিয়ে আসতে পারেন। এ অবস্থায় কী সমাধান নেওয়া যায়, কীভাবে পাড়ি দেওয়া যাবে সংকটকাল- এ বিষয়ে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের খুঁজে বের করতে হবে করণীয়।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper