ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্যাস কূপ ব্যবহার হোক ইতিবাচক

সম্পাদকীয়
🕐 ৯:৩৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ০৫, ২০২০

প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। নতুন করে প্রমাণিত হলো ফের। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নতুন কূপে গ্যাস পাওয়া গেছে। এর ফলে গ্যাসক্ষেত্রটি থেকে প্রতিদিন আরও অন্তত ১২ মিলিয়ন ঘনফুট বেশি গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়ার আশা করছে বাপেক্স। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্রের ৫ নম্বর কূপ থেকে গ্যাস উঠতে শুরু করে। তখন গ্যাসের সঙ্গে প্রচুর পানি উঠছিল। ফলে গ্যাস প্রাপ্তির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে অপেক্ষা করছিল বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। গত বুধবার দুপুরের পর থেকে পানি ওঠা কমে এলে গ্যাস পাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয় প্রতিষ্ঠানটি।

গত বুধবার বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর মো. আব্দুল হান্নান জানান, কূপটিতে গ্যাসের চাপ ছিল ১৮৮০ পাউন্ড/ইঞ্চি (পিএসআই)। এখন কূপটি পরিষ্কার করার কাজ চলছে। কাজ শেষ হলেই কূপটি থেকে কী পরিমাণ গ্যাস পাওয়া যাবে তা নিশ্চিত করে বলা যাবে। শ্রীকাইল পূর্ব-১ গ্যাসক্ষেত্রের প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ মুহাম্মদ কবীর জানান, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে ত্রি-মাত্রিক ভূ-তাত্ত্বিক জরিপের পর গ্যাসের অস্তিত্ব জানতে পারে বাপেক্স। ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর নবীনগর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা হাজীপুর গ্রামে কৃষিজমির মধ্যে রিগ বসিয়ে প্রকল্পের খনন কাজ শুরু করে বাপেক্স। ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি খনন কাজ শেষ হয়। এরপর নানা খুঁটিনাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গত মঙ্গলবার রাত থেকে পরীক্ষামূলকভাবে পাইপের মুখে আগুন দিয়ে গ্যাসের চাপ পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়।

যে জায়গা থেকে আগেই গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে, শ্রীকাইলের সেই অংশটি কুমিল্লা জেলার ভেতরে। নতুন কূপটি ছয় কিলোমিটার দূরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমানারে ভিতরে। শ্রীকাইল পূর্ব-১ গ্যাস প্রকল্পের খনন কর্মকর্তা মুহাম্মদ মহসিন আলম জানান, প্রাথমিকভাবে এ কূপে গ্যাসের চাপ বেশ ভালো পাওয়া যাচ্ছে। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রসেস প্লান্টে এ গ্যাস প্রক্রিয়াজাত করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। বাপেক্সের মহা-ব্যবস্থাপক (ভূ-তত্ত্ব) মো. আলমগীর হোসেন জানান, মাটির নিচে প্রায় তিন হাজার ৮০ মিটার গভীরে গ্যাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। গ্যাসের রিজার্ভ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, এ কূপ থেকে দৈনিক ১২ থেকে ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এটি মুজিববর্ষে দেশীয় কোম্পানি বাপেক্সের পক্ষ থেকে জাতির জন্য উপহার। শ্রীকাইল পূর্ব-১ গ্যাস কূপটি খননে ৭০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে বলে জানান প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

দেশের কোনো কোনো এলাকায় এখনও জ্বালানি সংকট রয়েছে। বিশেষ করে শীতকালে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে গ্যাসের চাপ কমে যায়। তখন রান্নাবান্নাসহ বিভিন্ন রকম ঝামেলায় পড়তে হয় নগরবাসীকে। নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার অবশ্যই আনন্দের সংবাদ। এ গ্যাস কোনোভাবেই যেন অপচয় না হয় সেদিকেও তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে। অপ্রিয় হলেও সত্য, ব্যবহারকারীরা একটি ম্যাচের কাঠি সাশ্রয় করার জন্য গ্যাসের চুলা জ¦ালিয়ে রাখেন। এ অপচয় কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। গ্যাসের ইতিবাচক ব্যবহার তথা অপচয় রোধে ব্যবহারকারী ও সংশ্লিষ্টরা আরও সতর্ক থাকবেন বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper