ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কয়লা চুরিতে জড়িতদের শাস্তি হোক

সম্পাদকীয়
🕐 ১০:০৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ০৪, ২০২০

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে ২০০৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৩ বছরে সাত লাখ টন কয়লার হদিস নেই। এ কয়লার মধ্যে ১ লাখ ৬১ হাজার টন সিস্টেম লস বা প্রথাগত লোকসান ধরা হয়েছে। বাকি ৫ লাখ ৪৮ হাজার টন কয়লা চুরি বা আত্মসাৎ হয়েছে, যার বর্তমান বাজারমূল্য ৯২৭ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি অভিযোগ অনুসন্ধান ও গবেষণা কমিশনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে বাংলাদেশ কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্যাব)। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লার যোগান ফুরিয়ে গেলে জানা যায় খনির উৎসমুখে থাকা ১ লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লার হদিস নেই। এ ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এটি তদন্তের জন্য কমিটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে বিসিএমসিএলের সাবেক সাত ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ২৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদক অভিযোগপত্র জমা দেয়।

তবে পেট্রোবাংলা ও বিসিএমসিএলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, খোয়া যাওয়া ১ লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা চুরি নয়, সিস্টেম লস বা প্রথাগত লোকসান হয়েছে। এ বিষয়ে ক্যাব গঠিত কমিটির প্রতিবেদন বলছে, পেট্রোবাংলা ও খনি কর্তৃপক্ষের দাবিকৃত সিস্টেম লসের চেয়ে আরও বেশি অর্থাৎ ১ লাখ ৬১ হাজার টন ধরার পরও ৫ লাখ ৪৮ হাজার টন কয়লার হদিস নেই।

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে কয়লা তোলার কাজটি করে চীনের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একটি কনসোর্টিয়াম। খোলা বাজারে তা বিক্রি বন্ধ হওয়ার আগে ২০১৮ সালে প্রতি টন কয়লা ১৬ হাজার ৯২৭ টাকায় বিক্রি করেছে খনি কর্তৃপক্ষ। এ হিসাবে ৯২৭ কোটি টাকার কয়লা ২০০৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চুরি হয়েছে। মূলত খনির তদারকি প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তার সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করায় এগুলো চুরি হয়েছে। আর এ চুরির পেছনে ছিলেন বিসিএমসিএলের সাবেক সাত ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ২৩ কর্মকর্তা- এই অভিযোগ পাওয়া যায়।

বিষয়টি নিয়ে ক্যাব নিজেদের মতো করে অনুসন্ধান করেছে। একটি প্রতিবেদনও তৈরি করেছে তারা। তারা বলেছে, বড়পুকুরিয়ায় কয়লা চুরির ঘটনাকে পুকুরচুরি ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না। কয়লা দুর্নীতি ও জাতীয় সম্পদ লুণ্ঠনের বড় উদাহরণ এটি। লুণ্ঠনকারীদের আমরা দায় মুক্তি দিতে পারি না। গোঁজামিল দিয়ে মানুষকে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে খনি কর্তৃপক্ষ। জাতীয় সম্পদ যারা চুরি করে এবং যারা বিচার করে না, দুটোই বড় অন্যায়। এদিকে কয়লার হিসাব না মেলার ঘটনাটি নিয়ে দুদকও তদন্ত করছে। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে- এটাই প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper