ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা

সম্পাদকীয়
🕐 ৭:৫০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০

বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সঙ্গে সম্পৃক্ত সব কিছুই। এ দুই বস্তুর মূল্য বাড়লে সব ক্ষেত্রেই দেখা দেয় মূল্যস্ফীতি। উৎপাদন ব্যয় বাড়লে বাজারে বেড়ে যায় পণ্যের দামও। পাইকারি, খুচরা ও সঞ্চালনা তিন ক্ষেত্রেই বিদ্যুতের দাম আরেক দফা বাড়িয়েছে সরকার। ফলে ভোক্তাদের প্রতি মাসে গুণতে হবে বাড়তি টাকা। সাধারণ গ্রাহক পর্যায়ে (খুচরা) প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে ৩৬ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। প্রতি ইউনিটের দাম ৬ টাকা ৭৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৭ টাকা ১৩ পয়সা। গতল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান মো. আবদুল জলিল তার কার্যালয়ে এ ঘোষণা দেন। মূল্য বৃদ্ধির এ ঘোষণা দিয়ে বলেন, আগামী মার্চ থেকেই এ দাম কার্যকর হবে।

গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, পাইকারিতে বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিট গড়ে ৪০ পয়সা বা ৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। ৪ টাকা ৭৭ পয়সা থেকে বেড়ে প্রতি ইউনিটের দাম হয়েছে ৫ টাকা ১৭ পয়সা। এ ছাড়া বিদ্যুৎ সঞ্চালন মূল্যহার বা হুইলিং চার্জ প্রতি ইউনিটে শূন্য দশমিক ২৭৮৭ টাকা থেকে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয়েছে শূন্য দশমিক ২৯৩৪ টাকা। এদিকে কোনো পর্যায়ের ভোক্তার জন্য বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা দেখছেন না ভোক্তা সংগঠন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম।

তিনি বলছেন, বিদ্যুৎ খাতে অযৌক্তিক ব্যয় না কমিয়ে সরকার জনগণের ব্যয়ভার বাড়িয়ে দিয়েছে। বিইআরসি চেয়ারম্যান আবদুল জলিল নানা ক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধিকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে বলেন, আমদানি করা কয়লার ওপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট ধার্য করা হয়েছে, প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের ওপর ১০ পয়সা করে ডিমান্ড চার্জ আরোপ করা হয়েছে, অবচয় ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে, ক্যাপাসিটি চার্জের পরিমাণ বেড়েছে, পল্লীবিদ্যুৎ সমিতিগুলোকে তুলনামূলক কমমূল্যে অধিক পরিমাণ বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে।

সাধারণ জনগণের কাছে কম দামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে, এক্সপোর্ট ক্রেডিট এজেন্সির অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোতে ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে। বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে এ কারণগুলোর ভূমিকা ছিল। সর্বশেষ ২০১৭ সালের নভেম্বরে পাইকারি বিদ্যুতের দাম গড়ে ৩৫ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ায় সরকার, যা ওই বছর ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়। গত বছরের জুনের শেষে গ্যাসের দাম বাড়ানোর দুই মাসের মাথায় বিদ্যুতের দাম আরেক দফা বাড়ানোর জন্য বিইআরসিতে প্রস্তাব পাঠাতে শুরু করে বিতরণ কোম্পানিগুলো। এসব প্রস্তাবের ওপর গত ২৮ নভেম্বর শুরু হয় গণশুনানি।

তবে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) পক্ষ থেকে বলা হয়, পাইকারিতে দাম না বাড়লে তাদের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। নিয়ম অনুযায়ী গণশুনানির ৯০ দিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত জানাতে হয় বিইআরসিকে। ৯০ দিন পূর্ণ হওয়া এক সপ্তাহ আগেই দাম বৃদ্ধির ঘোষণা এলো। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবনে আরও খারাপ প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আমরা মনে করি, জনজীবন বিপর্যস্ত হলে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অনুকূলে থাকবে না। প্রয়োজন জনমনে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper