ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শিশুকে বেঁধে পেটানোর বিচার দ্রুত হোক

সম্পাদকীয়
🕐 ৮:২৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০২০

গরু চুরির অভিযোগে এক শিশুকে হাত-পা বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে শিশুটিকে নির্দয়ভাবে পেটানো হয়। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধুমাইটারি গ্রামে শনিবার এই নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটে। গুরুতর অসুস্থ শিশুটিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। দেরিতে এ খবর সবার নজরে আসে এবং জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। শিশুটির নাম রাফিকুল ইসলাম।

পুলিশ ও এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, রাফিকুলের প্রতিবেশী ফজলু, ইয়াজল ও নাজমুল গভীর রাতে বাড়ি এসে রাফিকুলকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে। তাকে ফজলুর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রাতভর বেঁধে রাখা হয়। মারধরের পর রাফিকুলের পরিবারের কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করে তারা। তাৎক্ষণিক তিন হাজার টাকা দিলেও মন গলেনি তাদের।

পরদিন সকালে আবারও শত শত মানুষের সামনে হাত-পা বেঁধে রাফিকুলকে পেটানো হয়। রাফিকুল ও তার ভাই অভিযোগ করে বলেছেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গরু চুরির মিথ্যা অভিযোগে এই নির্যাতন চালায় তারা।

প্রায় ঘণ্টা দুয়েক নির্মম নির্যাতনের পর নিস্তেজ হয়ে পড়ে রাফিকুল। পরে তাকে উদ্ধার করে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন পরিবারের লোকজন। অভাবী পরিবারের সন্তান রাফিকুল ইটভাটার শ্রমিক। একটি শিশুর ওপর এ ধরনের নির্যাতনের ঘটনা অত্যন্ত গর্হিত ও বেদনাদায়ক। আধুনিক সভ্য সমাজে এমন বর্বর ঘটনা খুবই বিস্ময়কর এবং একই সঙ্গে তা উদ্বেগের বিষয়। আরও বিস্ময়কর ব্যাপার যে, প্রকাশ্যে একই গ্রামের শত শত লোকের সামনে শিশুটিকে মারা হয়।

কেউ কোনো কথা বলেনি, যেন আদিম বর্বর যুগ ফিরে এসেছে আবার! রাফিকুলকে বেঁধে পেটানোর ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। নিজ গ্রামে একটি শিশুকে এভাবে নির্যাতনের ঘটনা নজিরবিহীন। আরো ভয়ঙ্কর বিষয় হলো সবাই তাকিয়ে তাকিয়ে তামাশা দেখেছে, ছেলেটিকে রক্ষা করার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের পাশাপাশি নির্যাতনে সহায়তাকারীদের অত্যন্ত কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক সাজা হওয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।

এর আগেও দেশের বিভিন্ন স্থানে সামান্য ঘটনায় শিশু-কিশোরদের ওপর বর্বর নির্যাতন চালানোর ঘটনা ঘটেছে। প্রায়ই এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়। হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করার কারণে প্রাণ হারিয়েছে শিশু। এসব অপরাধের বিচার দ্রুত হওয়া উচিত। শিশু-কিশোরদের হাত-পা বেঁধে নির্যাতন চালানোর মতো ঘটনা যেন আর না ঘটে।

রাফিকুলের মতো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি আর কেউ যেন না হয় সে বিষয়ে প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। রাফিকুলকে নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকের সর্বোচ্চ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। অপরাধীরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন আইনের হাত থেকে তারা যেন কিছুতেই রেহাই না পায়।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper