ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অগ্নিদগ্ধে মৃত্যু কাম্য নয়

সম্পাদকীয়-১
🕐 ৮:৩৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১২, ২০১৯

অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিক মৃত্যুর সংবাদ এ বঙ্গে নতুন নয়। ইতিপূর্বেও বেশ কয়েকবার অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন অনেক শ্রমিক। বিপুলসংখ্যক মৃত্যুর পর কিছুদিন হইচই হয়, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয় কিন্তু সমস্যা থেকে যায় শেকড়েই। একেকটি দুর্ঘটনার পর বোঝা যায়, আগের ঘটনায় আসলে কার্যকরী ব্যবস্থা কিছুই নেওয়া হয়নি। যেই লাউ সেই কদুই রয়ে গেছে!

সম্প্রতি ঢাকার কেরানীগঞ্জের একটি প্লাস্টিক সামগ্রী তৈরির কারখানায় আগুনে ১৪ শ্রমিকের মৃত্যু ঘটেছে। গত বুধবার ও গতকাল বৃহস্পতিবার দফায় দফায় এসব মৃত্যু হয়। ঘটনার সূত্রপাত হিসেবে জানা যায়, বুধবার বিকালে কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় অবস্থিত প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্লাস্টিক কারখানায় আগুন লাগে। ধারণা করা হচ্ছে, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত।

১৪ জন মারা গেলেও এ ঘটনায় প্রায় ৩০ জনকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন উইনিটে ভর্তি করা হয়েছে। দগ্ধদের মধ্যে ১১ জনকে পাঠানো হয় নবনির্মিতি শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে। বাকিরা রয়েছেন ঢামেকের বার্ন ইউনিটে। অগ্নিদগ্ধদের মধ্যে অধিকাংশেরই ৯০ শতাংশ পুড়েছে।

প্রিয়জনের মৃত্যুতে ব্যথিত স্বজনরা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেছেন, দগ্ধ সবাই মারা গেলেই তদন্ত কমিটি হবে! স্বজনদের এমন বিক্ষুব্ধ সংলাপের সঙ্গে দ্বিমত করার সুযোগ তেমন নেই। কারণ অগ্নিঝুঁকি মোকাবেলায় বাংলাদেশ এখনো ‘সক্ষমতা’ অর্জন করেনি। সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করতে পারেননি কর্ম-উপযোগী পরিবেশ ও পরিস্থিতি।

শ্রমিকরা মারা গেছেন যে কারখানায় সেটা একতলা টিনশেডের। ওই কারখানায় ওয়ান টাইম প্লেট, কাপসহ প্লাস্টিকের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করা হতো। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় সংসদ সদস্য জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বুধবার রাতে সাংবাদিকদের জানান, ওই কারখানার কোনো অনুমোদন ছিল না।

এদিকে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ জানতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে হতাহতদের স্বজনকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা এসেছে। যে কোনো মৃত্যু বেদনার। আমরা মনে করি, অগ্নিকাণ্ড মোকাবেলায় সরকার, কারখানা মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

একেকটি অমূল্য প্রাণ ঝরে যাওয়া মানে একটি মৃত্যু নয়, তার পরিবারের অন্য সদস্যদের তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সংশ্লিষ্টরা মনোযোগ হবেন বলেই প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper