পরিবহন ধর্মঘটে জনভোগান্তি
নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত হোক
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৮:৪১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২০, ২০১৯
চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে নতুন সড়ক পরিবহন আইন। অতীতের মতো যথারীতি আইন প্রয়োগ শুরু হওয়ার পর থেকেই পরিবহন-মালিক শ্রমিকদের ধর্মঘট শুরু হয়ে গেছে। আর এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে। সারা দেশে ট্রাক চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে কার্যত ব্যাপক দুর্ভোগের দিকেই পরিস্থিতিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
পত্রিকায় প্রকাশ, নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের পর গত দুদিন ধরে যশোর অঞ্চলের কয়েকটি জেলায় বাস চলাচল বন্ধের পর গতকাল বুধবার থেকে সারা দেশে ট্রাক ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
বাস বন্ধ থাকায় সংশ্লিষ্ট জেলার সাধারণ মানুষ যাতায়াত করতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। আর ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় পণ্যপরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে অনেকাংশে। যে কারণে রাজধানী শহরসহ সারা দেশে পণ্য বিশেষ করে কাঁচাপণ্যের দামে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জানা গেছে, বৈধ লাইসেন্সধারী চালকরা গাড়ি চালাতে চাইলেও যাদের বৈধ লাইসেন্স নেই তারা বৈধ লাইসেন্সধারীদের গাড়ি চালাতে বাধা দিচ্ছে। আর কিছু পরিবহন মালিক অবৈধ চালকদের পক্ষ হয়ে গোপনে কাজ করছেন এবং তাদের বিভিন্নভাবে উসকানি দিচ্ছেন। ওই সমস্ত মালিকরা মুখে স্বীকার না করলেও পরোক্ষভাবে পরিবহন আইন মানতে চাচ্ছেন না।
যারা পরিবহন আইন মানতে চান না, তারা রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালাতে চান আর যে সব ড্রাইভারের বৈধ লাইসেন্স নেই তাদেরও ব্যবহার করতে চান। সরকার সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর করার পর ওই সমস্ত মালিক-শ্রমিক জেল-জরিমানার ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। তারাই বর্তমানে সারা দেশে অরাজকতার পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
বাংলাদেশ ট্রাক-কভার্ডভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সড়ক পরিবহন আইন স্থগিত করে মালিক-শ্রমিকদের আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জরিমানার বিধান ও দণ্ড উল্লেখ করে একটি যুগোপযোগী বাস্তবসম্মত ও বিজ্ঞানভিত্তিক সঠিক আইন প্রণয়ন করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় চালককে এককভাবে দায়ী করা যাবে না।
সড়ক দুর্ঘটনাজনিত কোনো মামলায় চালককে আসামি করলে তা অবশ্যই জামিনযোগ্য ধারায় হতে হবে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষী চিহ্নিত করার কাজে মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধিদের যুক্ত করতে হবে। এ কমিটির মাধ্যমে সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় কোনো গাড়ির মালিককে গ্রেফতার বা হয়রানি করা যাবে না।
‘সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা কমিটি’, ‘সড়ক পরিবহন আইনশৃঙ্খলা কমিটি’ এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় গঠিত পণ্য পরিবহন সংশ্লিষ্ট যে কোনো কমিটিতে প্রতিনিধি রাখার দাবি জানান পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা। আমরা দৃশ্যমান এ অরাজকতার সমাধান চাই। যেহেতু সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব, তাই সড়ক নিরাপদ রাখতে প্রয়োজনীয় ইস্যুতে আলোচনার ভিত্তিতে সমাধান করা হোক, আমরা সে প্রত্যাশাই করি।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228