ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নতুন সড়ক আইন বাস্তবায়ন

নিরাপদ সড়কের প্রত্যাশা

সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:৪৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৯, ২০১৯

বহুল প্রতীক্ষিত সড়ক আইন অবশেষে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন আইন হিসেবে গণ্য হওয়া এ আইনের প্রয়োগ শুরু হওয়ার পর অতীতের ন্যায় এবারও রাস্তায় গণপরিবহন স্বল্পতায় জনগণকে ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে, সেই সঙ্গে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা আইনের সংশোধনের দাবিতে ধর্মঘট ডেকে দেশজুড়ে অচলাবস্থা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। খোলা কাগজে প্রকাশ, সড়কে নতুন আইন বাস্তবায়নের পর থেকেই যাত্রী জিম্মির পুরনো কৌশলে হাঁটছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।

গত সোম ও মঙ্গলবার তাদের ধর্মঘটে কয়েকটি জেলার যাত্রীদের পোহাতে হয়েছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। এদিকে আজ থেকে অনির্দিষ্টকাল কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। নতুন সড়ক আইন প্রয়োগ শুরু হয়েছে গত রোববার থেকে। প্রথম দিনে মালিক-শ্রমিকরা মোটামুটি পর্যবেক্ষকের ভূমিকা নিলেও আইন প্রয়োগের দ্বিতীয় দিন সোমবার থেকে আইন না মানার আন্দোলন আরও বড় পরিসরে পৌঁছেছে। দ্বিতীয় দিনে ঢাকার সড়কে ৮৮টি মামলা হয় বিভিন্ন পরিবহনের বিরুদ্ধে।

বরাবরের মতো পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা এবারও পুরনো কৌশলেই সরকার এবং সাধারণ মানুষকে জিম্মির পাঁয়তারা করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিবহন খাতে যে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে, আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা ও পেশিশক্তির যে অপসংস্কৃতি চালু রয়েছে তা ভাঙা না গেলে শৃঙ্খলা ফেরানো যাবে না।

অভিযোগ রয়েছে, মালিকপক্ষ বরাবরই শ্রমিকদের ভুলভাল বুঝিয়ে উসকানি দিয়ে মাঠে নামায়। শ্রমিকরাও অনেক ক্ষেত্রে না বুঝেই মালিকদের পাতা ফাঁদে পা দেয়। মালিকপক্ষ একদিকে যেমন সরকার ও যাত্রী সাধারণকে জিম্মি করছে স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে, অন্যদিকে পরিবহন শ্রমিকদের কৌশলে জিম্মি করে রেখেছে তারা। শ্রমিকরাও না বুঝেই জনবিরোধী অবস্থান নিচ্ছেন।

যে আইনটি নিয়ে মালিক-শ্রমিকসহ পরিবহন নেতাদের এমন আপত্তি তার সূচনা গত বছর ঢাকায় বাসচাপায় দুই ছাত্রছাত্রীর মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন আন্দোলন। বিমানবন্দর সড়কে দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজুর মৃত্যুর প্রতিবাদে স্কুল শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে নতুন সড়ক আইন পাস হয় সংসদে।

চলতি মাসের প্রথম দিন থেকে এটি কার্যকরের কথা বলা থাকলেও সাধারণ মানুষসহ পরিবহন সংশ্লিষ্টদের আইনটি সম্বন্ধে যথাযথভাবে অবগত করার জন্য একাধিক দফায় সময় বাড়ানো হয়। বেপরোয়া মোটরযানের কবলে পড়ে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড, সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে এ আইনে।

এই আইন প্রণয়নের পর থেকেই বিরোধিতা করছে পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও তাদের সংগঠনগুলো। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে আইন না মানার প্রবণতা প্রবল বলে অভিযোগ রয়েছে। এরকম নৈরাজ্যের মধ্যেও সড়কে শৃঙ্খলা ফিরুক আমরা সে প্রত্যাশাই করি।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper