ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

থামছে না গৃহকর্মী নির্যাতন

মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে

সম্পাদকীয়
🕐 ৯:৩৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৯, ২০১৯

বর্তমান সমাজব্যবস্থায় অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল পরিবারগুলোর দৈনন্দিন জীবনে নানাবিধ প্রয়োজনেই গৃহকর্মী প্রয়োজন হয়। নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে গৃহকর্মীরা গৃহস্থলি কাজে সহযোগিতা করে থাকেন। এ প্রেক্ষিতে গৃহকর্মীদের প্রতি সুবিচারের প্রসঙ্গ সবার ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয় না। ফলে গৃহকর্মী নির্যাতনের চিত্র প্রায় সময়ই গণমাধ্যমে উঠে আসে।

পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে গৃহকর্মী নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে না। নির্যাতনের শিকার কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়া ধর্ষণের ঘটনাও ঘটছে। কিন্তু এর আইনি প্রতিকার হয় না। মামলা হয় অর্ধেকেরও কম। মানবাধিবার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব বলছে, চলতি বছরের প্রথম আট (জানু-অক্টোবর) মাসে ৩২ গৃহকর্মী নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১১ জন নিহত হয়েছেন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১২ জন। এসিড সন্ত্রাসের শিকারও হয়েছেন গৃহকর্মীরা। কিন্তু এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে মাত্র ১৫টি। নির্যাতন সইতে না পেরে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে।

ঢাকাসহ সারা দেশে যারা গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন তাদের ৯০ ভাগেরও বেশি নারী। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি অপ্রাপ্ত বয়স্ক বা ১৮ বছরের নিচে। জরিপে দেখা গেছে, যারা হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হয় তাদের অধিকাংশের বয়স ১৩ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। তারপরই রয়েছে ৭ থেকে ১২ বছরের শিশুরা।

২০১৮ সালে ১৮ জন গৃহকর্মী হত্যার শিকার হয়েছেন। আত্মহত্যা করেছেন পাঁচজন, ধর্ষণের শিকার হয়েছেন চারজন। মোট নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ৫৪টি। কিন্তু ২২টি ঘটনায় কোনো মামলাই হয়নি। ২০১৭ সালে নিহত হন ১৯ জন, ধর্ষণের শিকার হন সাত জন। ৪৩টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও মামলা হয়েছে মাত্র ২৫টির। ২০১৬ সালে সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন। ৪০ জন নিহতের মধ্যে ১৮ জনই ছিল শিশু।

এই হিসাব কয়েকটি নির্দিষ্ট সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে করা, কিন্তু বাস্তবচিত্র অনেক ভয়াবহ। কারণ অনেক নির্যাতনের ঘটনায় অর্থ ও চাপের মুখে সমঝোতা করা হয়। গৃহকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা দরিদ্র হওয়ায় তারা মামলা মোকদ্দমায় যেতে চান না বা যেতে সাহস পান না।

প্রভাবশালীরা অনেক নির্যাতনের ঘটনাই ধামাচাপা দিয়ে ফেলেন। কোনো যুক্তিতেই গৃহকর্মীদের প্রতি এমন অবিচার সমর্থন করা যায় না। গৃহকর্মীদের মানবাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারসহ দেশের নাগরিকদের সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper