আবরার হত্যায় অভিযোগপত্র
দোষীদের কঠিন শাস্তি হোক
সম্পাদকীয়-১
🕐 ১০:১৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
বিশ্ববিদ্যালয় লেখাপড়ার স্থান হলেও নানান কারণে এখানে আন্দোলন-বিক্ষোভ হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ এখনো চলমান। গত মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের বেশ কয়েকজন কর্মী। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হওয়া মামলায় সম্প্রতি আদালতে ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। এখন আদালত এই অভিযোগপত্র গ্রহণ করে হত্যাকাণ্ডের বিচারকার্য শুরু করলেই দোষীদের শাস্তি হবে। সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতেও অপরাধীদের উচিত শাস্তি দেওয়া বাঞ্ছনীয়।
খোলা কাগজের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে গত ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন আবরারের বাবা ১৯ শিক্ষার্থীকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ এজাহারের ১৬ জনসহ মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করে। অভিযোগপত্রের আসামিদের মধ্যে ১৯ জনের নাম এজাহারেই উল্লেখ ছিল। পুলিশ তদন্তে নেমে আরও ছয়জনের সম্পৃক্ততা পায়। আর সম্প্রতি আদালতে জমা দেওয়া অভিযোগপত্রের ২৫ আসামির মধ্যে চারজন এখনো পলাতক।
বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরারকে নির্যাতন এবং লাশ ফেলে যাওয়ার দৃশ্য সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। এতে স্পষ্ট হয়েছে খুনের সঙ্গে জড়িতদের চেহারা। আইনে শাস্তি হওয়ার আগে অপরাধী কিংবা আসামি না বলা গেলেও সবাই তাদের চিনেছে সবাই। অনেকেই পুলিশের কাছে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এখন বিধি অনুযায়ী তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি এবং শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করা ওই শিক্ষার্থীরা সমাজের উন্নয়নে কতটুকু ভূমিকা রাখবে তা এক বড় প্রশ্ন। যারা একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া সতীর্থকে পিটিয়ে খুন করতে পারে তাদের দ্বারা ভালো কিছু আশা করা দুরূহ। অপরাধ অনুযায়ী কঠিন শাস্তিই তাদের প্রাপ্য।
বিজ্ঞান প্রযুক্তিবিষয়ক সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয়ও এতদিন রাজনীতির ক্ষমতার শিকলে আটকা ছিল। আবরার হত্যার পর সে শিকল থেকে মুক্ত হয়েছে বুয়েট। শিক্ষার্থীর অধিকার রক্ষায় ছাত্ররাজনীতি প্রয়োজনীয় হলেও ক্ষমতা দখল করে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, নির্যাতন, হত্যার মতো ঘটনা মেনে নেওয়ার মতো নয়। এদিকে অভিযোগপত্র অনুযায়ী, আবরার হত্যায় জড়িত ২৫ জনের মধ্যে এখনো চারজন পলাতক। তাদেরও যথা সময়ে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। যার যত ক্ষমতাই থাকুক না কেন তা আইনের ঊর্ধ্বে নয়, এ কথা আদালতকেই প্রমাণ করতে হবে। আমরা চাই, আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা কঠিন শাস্তি পাক। একই সঙ্গে বুয়েটসহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সুন্দর ছাত্ররাজনীতি এবং শৃঙ্খলা ফিরে আসুক।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228