ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ট্রেন দুর্ঘটনা
পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৮:৩৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০১৯
ট্রেন আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম। স্বল্প খরচ ও তুলনামূলক কম সময় ব্যয়ে এবং নিরাপদ যাতায়াতের জন্য অনেকেই রেলপথে যাতায়াত করে থাকেন। তবে অন্য যোগাযোগ মাধ্যমের মতো ট্রেনের ক্ষেত্রেও দুর্ঘটনা ঘটে থাকে, এক্ষেত্রে যে ক্ষয়ক্ষতি হয় তা কোনোভাবেই পূরণ করা যায় না। তাই নিরাপদ রেল যোগাযোগের জন্য সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই।
পত্রিকায় প্রকাশ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় দুই ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ১৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও যাত্রী মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত সোমবার দিবাগত রাত ২টা ৪৮ মিনিটে উপজেলার মন্দবাগে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন দুটির মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। এ সময় একটি ট্রেনের একাধিক বগি আরেকটি ট্রেনের কয়েকটি বগির ওপর উঠে যায়। স্টেশন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের চালক সিগন্যাল (সংকেত) অমান্য করায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
মন্দবাগ রেলস্টেশনে দাঁড়ানোর জন্য এই সিগন্যাল দেওয়া হয়। ওই সিগন্যালে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস প্রধান লেন থেকে ১ নম্বর লাইনে যেতে শুরু করে। ট্রেনটির ছয়টি বগি ১ নম্বর লাইনে উঠতে পেরেছিল। অন্য বগিগুলো প্রধান লেনে থাকা অবস্থায় তূর্ণা নিশীথা সিগন্যাল অমান্য করে। এতে তূর্ণা নিশীথার একাধিক বগি ওই ট্রেনের কয়েকটি বগির ওপর উঠে যায়। এতে উদয়নের তিনটি বগি দুমড়েমুচড়ে যায়। নিহত ১৬ জন সবাই উদয়নের যাত্রী বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ দুর্ঘটনায় রেল মন্ত্রণালয়, রেলভবন ও বিভাগীয় রেলওয়ে কার্যালয় চারটি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন একটিসহ মোট পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটিগুলোকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। রেলমন্ত্রী বলেছেন, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে এক লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আর আহতদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের চালক, সহকারী চালক এবং ট্রেনের গার্ডকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক যাত্রী। ঘটনাস্থলের কাছে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প খোলা হয়েছে। অস্থায়ী তথ্যকেন্দ্রে নিহত লোকজনের পরিচয় দিয়ে লাশ নিতে আসছেন স্বজনরা। অনেকেই এখনো তাদের প্রিয়জনকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। আমরা এমন মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় মর্মাহত, ভবিষ্যতে যেন এমন নির্মম ঘটনা না ঘটে সেজন্য রেল সংশ্লিষ্ট সবার সতর্ক থাকা জরুরি। কারণ যাত্রাপথে মৃত্যুবরণের ফলে স্বজন হারানোর শোক কোনো কিছুর বিনিময়েই পূরণ সম্ভব হয় না।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228