ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ

পাথেয় হোক মহৎ জীবন

সম্পাদকীয়-১
🕐 ১২:১০ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১০, ২০১৯

ইসলাম ধর্মের সর্বশেষ নবী ও রসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র জন্ম ও ওফাতের পুণ্য স্মৃতিময় দিন আজ। হিজরি চান্দ্রমাসের তারিখ অনুযায়ী ১২ রবিউল আউয়াল, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে বর্তমান সৌদি আরবের মক্কা নগরে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের একই দিনে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তকের জন্ম ও ওফাতের এই দিনটি বিশ্বের সব মুসলমানের কাছে অশেষ পুণ্যময় একটি দিন।

ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, ন্যায়নিষ্ঠা, সততা ও সত্যবাদিতার জন্য হজরত মুহাম্মদ (সা.) নবুয়তপ্রাপ্তির আগেই খ্যাতি অর্জন করেছিলেন ‘আল-আমিন’ নামে। ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায় নির্বিশেষে সর্বশ্রেষ্ঠ মানবিক গুণাবলি হিসেবে এসব সৎগুণ সব কালে, সব দেশেই স্বীকৃত। শুধু তাই নয়, তার মধ্যে সম্মিলন ঘটেছিল করুণা, ক্ষমাশীলতা, বিনয়, সহিষ্ণুতা, সহমর্মিতা, শান্তিবাদিতার মতো সব মানবিক গুণাবলির। আধ্যাত্মিকতার পাশাপাশি কর্মময়তাও ছিল তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

আরব ভূখণ্ডে এমন এক সময়ে তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন, যখন পুরো অঞ্চলটি অশিক্ষা, কুসংস্কার, গোষ্ঠীগত হানাহানি, দাসপ্রথা, নারীর প্রতি চরম বৈষম্যসহ নানা রকম সামাজিক অনাচারে নিমজ্জিত ছিল। হজরত মুহাম্মদ (সা.) সেই ঘোর অন্ধকার সময়ে আবির্ভূত হন আলো হয়ে।

অন্যায়-অবিচার-অজ্ঞানতার আঁধার থেকে মানুষকে তিনি সত্য ও ন্যায়ের আলোকিত পথ দেখান। ইসলামের সেই আলো এরপর শুধু সেই ভূখণ্ডে সীমাবদ্ধ না থেকে ছড়িয়ে পড়ে দুনিয়ায়। ক্রমেই তিনি পরিচিতি লাভ করেন একজন আলোকিত মানুষ হিসেবে। চরিত্রগত বৈশিষ্ট্যে হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআনের জীবন্ত উদাহরণ।

চরম শত্রুরাও তাঁর চারিত্রিক সুমহান মাধুর্যকে একবাক্যে স্বীকার করত। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে তিনি সবার কাছেই আস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিলেন। ইসলাম যখন বিজয়ীর বেশে তার নিজ মাতৃভূমি আরবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে তখন তিনি ক্ষমতা পেয়েও ছিলেন ন্যায়বিচারের এক মূর্ত প্রতীক। তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের কোনো অভিযোগ কেউ করতে পারেনি। ধর্ম প্রচারের স্বার্থে যেসব যুদ্ধে তাঁকে বাধ্য হয়ে জড়াতে হয়েছিল, সেসব যুদ্ধে বন্দিদের সঙ্গে তিনি খুবই উদার ব্যবহার করেছেন। শুধু তাঁর চরিত্র মাধুর্যের গুণে অনেকেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মুসলমান হয়েছেন।

মানবজাতির মুক্তি ও কল্যাণের জন্যই আবির্ভাব ঘটেছিল এই মহামানবের। তাঁর সত্য ও ন্যায়ের আদর্শ ছিল সর্বমানবিক। আজকের হানাহানি ও সংঘাতময় পৃথিবী শান্তির দিশা পেতে পারে হজরত মুহাম্মদ (সা.) প্রদর্শিত শান্তি ও সমঝোতার পথে। তাঁর সুমহান জীবনাদর্শ থেকে মানুষের প্রতি সর্বোত্তম ব্যবহার, বিনয়ী চরিত্র, বিনম্র ব্যক্তিত্ব, আনুগত্য, সহযোগিতা ও পারস্পরিক সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনসেবা ও মানবকল্যাণ সুনিশ্চিত করাই হোক পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর (সা.) শিক্ষা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper