ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নষ্টদের অধিকারে সব কিছু

আলো আসুক অন্ধকারে

সম্পাদকীয়-১
🕐 ৮:৩৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১১, ২০১৯

সময়টা বড্ড অস্থির, কিছুতেই যেন আস্থার জায়গা মিলছে না। সব জায়গায় জমাট বেঁধে আছে এক ঘোলাটে অন্ধকার। একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনার রেশ মিলতে না মিলতেই জন্ম নিচ্ছে নতুন দুর্ঘটনা। এত হতাশায় চিন্তায় নিমজ্জিত দেশের জাগ্রত বিবেক। আমরা কী এমন নির্মমতার পরিণতিতে ভবিষ্যতের অপরিহার্য দুর্গতির পথে এগোচ্ছি, নাকি এখনো আলো আছে অন্ধকারাচ্ছন্ন টানেলের শেষ প্রান্তে? এ প্রশ্ন আজ সবার মনে জেগেছে।

প্রয়াত লেখক ও শিক্ষাবিদ ড. হুমায়ুন আজাদ অনেক আগেই বলেছেন সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে। মৌলবাদী গোষ্ঠীর দ্বারা আক্রমণ-পরবর্তী নিজের অকস্মাৎ মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তার ধারণার প্রমাণও মিলেছিল। এরপর অনেক জল গড়িয়েছে, জল-কাদায় পরিস্থিতি হয়েছে আরও ঘোলাটে ও পুতিদুর্গন্ধময়। বর্তমানে উক্তিটি সর্বজনীনতা লাভ করেছে, আসলেই সব কিছু নষ্টদের অধিকারে! দ্বিমত পোষণের অবকাশ নেই।

গত রোববার রাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ নতুন করে যে ন্যক্কারজনক ইতিহাসের জন্ম দিয়েছে, তা সংবেদনশীল মানুষকে বহুদিন কাঁদাবে। আবরার হত্যার বিচার ও শিক্ষাঙ্গনে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে সোচ্চার সারা দেশ। ছাত্ররাজনীতির পক্ষে-বিপক্ষে মত রয়েছে।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, ছাত্ররাজনীতির নামে যা হচ্ছে তা অপরাজনীতি। রাজনীতি থেকে ‘অপ’ দূর করতে পারলে কোনো সমস্যা থাকে না। ক্রমশ সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাচ্ছে, গিলে খাচ্ছে মানবিকতা, যাবতীয় শুভবোধ। পচন শুরু হয় মাথা থেকেই; রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাত্রদের নীতি-নৈতিকতার যে অবক্ষয় তাতে সংশয় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা, কেমন হবে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ!

ইতোপূর্বে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের জরিপে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হওয়ার ‘শিরোপা’ পেয়েছে বাংলাদেশ। এ কলঙ্কদাগ এখনো মোছেনি, সহসা মোছারও নয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। আজকের ছাত্ররাই নেতৃত্ব দেবেন আগামীর বাংলাদেশের। সেই ছাত্ররাই যদি সুষ্ঠুভাবে বেড়ে না ওঠেন তাহলে ভবিষ্যতের বাংলাদেশের চিত্র সুখকর হবে না বলা বাহুল্য। পথভ্রষ্ট ছাত্রদের ছোট একটা অংশ দুর্বৃত্তপনার দীক্ষা নিয়েছেন; এরাই যে চাকরিজীবনে ঘুষ-দুর্নীতিসহ নানা অপকর্মে জড়াবেন বলার অপেক্ষা রাখে না।

আমরা শত অন্ধকারের মাঝেও আশার আলো দেখতে চাই। বিদ্যমান হতাশাগ্রস্ত সময়ে যে দুর্দশা দেখা যাচ্ছে, তা হঠাৎ করে সৃষ্ট নয় বরং দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত নষ্ট সময়ের ফসল। যেহেতু এখনো আলোর মশাল বহন করা দিকপালরা সমাজে রয়েছেন, তাই আমাদের আশা তাদের দেখানো সমাধানের পথে জাতি এগোবে। আমাদের কর্মময় ইতিহাস-ঐতিহ্য অনেক সমৃদ্ধ, তাই শেকড়ের ধারায় সময়ের সঙ্গে দেশে আবারও সুদিন ফিরবে আমরা সে প্রত্যাশাই করি।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper