ক্যাসিনো সম্রাট গ্রেফতার
ইতিবাচক একটি পদক্ষেপ
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:১৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০৬, ২০১৯
রাজধানী ঢাকায় রাতের আঁধারে বেশ জমে উঠেছিল ক্যাসিনো জুয়ার ব্যবসা। এর মাধ্যমে অবৈধভাবে বিত্ত-বৈভবের মালিক হচ্ছিলেন শাসক দলের ছত্রছায়ায় নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করা কতিপয় দুষ্কৃতকারী। ক্ষমতার দাপটে তাদের অপকর্ম নিয়ে কেউ কিছু বলতেও পারত না। অবশেষে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে একে একে ধরা পড়তে শুরু করে ক্যাসিনো ব্যবসার রাঘববোয়ালরা। সর্বশেষ গ্রেফতার হয়েছেন ক্যাসিনো ব্যবসার সবচেয়ে আলোচিত নাম ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট।
পত্রিকায় প্রকাশ, রোববার ভোর ৫টায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কুঞ্জশ্রীপুর গ্রাম থেকে অভিযান চালিয়ে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে তার সহযোগী আরমানসহ গ্রেফতার করে র্যাব-১। ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ হিসেবে আলোচিত এই যুবলীগ নেতাকে কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামের এক পরিবহন ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে ওই বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন সম্রাট। ধারণা করা হয়, তিনি চৌদ্দগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার দিবাগত রাত ১২টার পর কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামটি ঘিরে ফেলে র্যাবের বিশেষ একটি দল। গ্রামটিতে কয়েক ঘণ্টার অভিযান চালান র্যাব সদস্যরা। অভিযানের সময় ওই গ্রামে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা। পরে ভোর ৫টার দিকে এক পরিবহন ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী আরমানকে গ্রেফতার করে র্যাব। এর আগে ক্যাসিনোকাণ্ডে অভিযুক্ত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান পরিচালনার পর থেকেই সম্রাট কোথায় অবস্থান করছেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সম্রাট নিজে ক্যাসিনো দেখাশোনা না করলেও তার ক্যাসিনো চালাতেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসার এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক ওরফে সাঈদ।
জানা যায়, দলের দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কঠোর মনোভাব দেখানোর পর এবং এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়ার পর দুর্নীতিবাজদের মধ্যে আতঙ্ক শুরু হয়ে যায়। যুবলীগ নেতা খালেদকে গ্রেফতারের পর একের পর এক বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। খালেদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা জি কে শামীমকে।
পরিস্থিতি বেসামাল দেখে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ওরফে ক্যাসিনো সম্রাট লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান। আমরা ক্যাসিনো ব্যবসার মাধ্যমে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদবিরোধী চলমান অভিযানকে স্বাগত জানাই। আশা করি, এর মাধ্যমে সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে এবং অপরাধীরা অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ আর পাবে না।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228