ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

গুটিয়ে যাচ্ছে খেলাধুলা

এখনই সচেতন হোন

সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:১৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০৩, ২০১৯

একুশ শতক শুরুর প্রথম দশকেও কিশোর-তরুণ-যুবাদের মধ্যে খেলাধুলা নিয়ে উত্তেজনা কাজ করত। এখনো করে। তবে প্রযুক্তির কল্যাণে স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপের মতো সৃষ্টি কর্মে ভাটা পড়েছে প্রত্যক্ষ খেলা। আর বর্তমানে খেলার নামে বানানো ক্লাবে যে খেলা (জুয়া) হচ্ছে তাতে মুখ কুঁচকে যাচ্ছে শুধীজনের। রাজধানীর নামিদামি ক্লাবগুলোয় যখন জুয়ার আসর বসে তখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, তাহলে কি সব ক্লাবেই জুয়া চলে? আর খেলাধুলারই ভবিষ্যৎ কী? ক্লাবগুলোয় আজ ক্যাসিনো ব্যবসা বসেছে, মাঠে গজিয়েছে বড় ঘাস।

খোলা কাগজের প্রতিবেদন বলছে, ঢাকায় ফুটবল-ক্রিকেট সংক্রান্ত ক্লাবগুলোয় দুই দশক আগে রমরমা পরিস্থিতি বিরাজ করলেও এখন তা হারিয়েছে। বর্তমানে বেশির ভাগ ক্লাবেই খেলার নামগন্ধ নেই। তবে খেলারও আজ ধরন পাল্টেছে। এখন ক্যাসিনো, হাউজি আর মাদকের জঞ্জালে ছেয়ে গেছে ক্লাবগুলো। আর খেলা গেছে আবর্জনার স্তূপে। ক্ষমতা পেয়ে টাকার নেশায় প্রত্যক্ষ খেলা বাদ দিয়ে এসব ক্লাবে বসানো হয়েছে ক্যাসিনো। আর সেখান থেকে শত শত কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। দুঃখের বিষয় এসব ক্রীড়া ক্লাবের নেতৃত্বে খেলাধুলো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নেই। পুরোটাই সুবিধাবাদী রাজনৈতিক নেতা আর লুটেরাদের দখলে। ফলে উঠতি কিশোর বা যুবসমাজ সুস্থ বিনোদনের অভাবে ঝুঁকে পড়ছে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে।

গত সপ্তাহে শুরু হওয়া ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে ক্লাবপাড়া-খ্যাত রাজধানীর মতিঝিলের মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, ইয়ংমেন্স ক্লাব, আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ, দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাব, ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিংসহ বিভিন্ন ক্লাবের লুকায়িত তথ্য বেরিয়ে আসে। ফাঁস হয় রমরমা ক্যাসিনোর ভয়ঙ্কর তথ্য। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরাই ক্লাবগুলোয় ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তারা হাজার কোটি টাকা আয় করেছেন এর মাধ্যমে। বছরের পর বছর এসব অপকর্ম চললেও খেলাধুলার ছিটেফোঁটাও ছিল। এখন সেসব ক্লাব আর খেলাধুলায় সংশ্লিষ্ট নেই। সেখানে এখন ভালোর স্থলে চলে অপকর্ম। সরকারি চলমান অভিযান অব্যাহত রাখা এবং তৎসংশ্লিষ্ট ক্লাবগুলোয় খেলার ধারা চালু করাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সরকার এখন এ বিষয়টিতে মনোনিবেশ করলে ক্লাবগুলোয় আবার খেলাধুলার অগ্রগতি নিয়ে কাজ করবে।

আমরা দেখছি, তরুণ-যুব সমাজের অনেকেই এখন খেলাধুলা বিমুখ হচ্ছে। উৎসাহ-প্রণোদনার যেমন ঘাটতি রয়েছে তেমনি দেখা গেছে নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আকাক্সক্ষা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপরিকল্পিত ব্যবহার, মাদক, জুয়ার করালগ্রাসে দিন দিন ধ্বংস হচ্ছে যুবসমাজ। ক্ষয় হচ্ছে প্রাণশক্তি। ক্যাসিনো কেলেঙ্কারি সম্পর্কে এখন অবগত বিশ্ববাসী। এই পরিস্থিতিতে প্রত্যেককে যার যার জায়গা থেকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে। অভিভাবক শ্রেণির লোকজনকে তৎপর হতে হবে। যুবসমাজকে টিকিয়ে ভবিষ্যৎ সুন্দর করতে হলে খেলাধুলার বিকল্প নেই। সুস্থ-সবল জাতি গড়তে হলে প্রতিটি ক্লাবে সুস্থধারার খেলাধুলার প্রচলন হোক, এই আমাদের চাওয়া।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper