জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সফলতা চাই
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:৪১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৯
রোহিঙ্গারা আশ্রিত হয়েই দেশের জন্য ‘বিষফোঁড়া’য় রূপ নিয়েছে। মানবতা দেখিয়ে এখন তাদের সামাল দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। খুনোখুনি, মাদক বাণিজ্য, পরিবেশ নষ্ট, কর্মসংস্থানের ঘাটতিসহ স্থানীয়দের নানান ঝামেলার মুখোমুখি হতে হচ্ছে শুধু আশ্রিত রোহিঙ্গাগোষ্ঠীর জন্য। সরকার-প্রশাসন যথেষ্ট তৎপর থাকা সত্ত্বেও রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী অনেক আগেই বিশ্ববাসীর দারস্থ হয়েছেন।
সম্প্রতি জাতিসংঘের ৭৪তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চারটি প্রস্তাব তুলে ধরছেন। সেই প্রস্তাবগুলো বিশ্বমহল বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে মিয়ানমার সরকারকে উদ্বুদ্ধ করবে বলেই বিশ্বাস।
খোলা কাগজের প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবগুলো হলো- রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবর্তন বিষয়ে মিয়ানমারকে অবশ্যই তাদের রাজনৈতিক ইচ্ছা সুস্পষ্ট করতে হবে। এজন্য রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ কী করছে, সেটাও সুস্পষ্টভাবে বলতে হবে। বৈষম্যমূলক আইন ও চর্চা পরিত্যাগ করতে হবে।
রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের উত্তর রাখাইন রাজ্যে ‘যাও ও দেখ’- এই নীতিতে পরিদর্শনের অনুমতি দিয়ে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই তাদের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে হবে। রাখাইন রাজ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বেসামরিক পর্যবেক্ষক মোতায়েন করে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই রোহিঙ্গাসহ সবার নিরাপত্তা ও সুরক্ষার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, রোহিঙ্গা সংকটের মূল কারণ ও রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতা দূর করা হয়েছে।
এই প্রস্তাবগুলো আন্তর্জাতিক মহলে জানানোর পর মিয়ানমার তা মানলেই রোহিঙ্গারা নিরাপদে তাদের আবাসভূমিতে ফিরে যেতে পারবে। কিন্তু অতীতের কার্যক্রম অনুযায়ী কোনোমতেই মিয়ানমার সরকার তাদের কথা রাখছে না। এর আগে একাধিকবার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে কথা, এমনকি চুক্তি হলেও আজ পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার। উল্টো কিছুদিন পরপর সীমান্ত পাড় হয়ে আরও রোহিঙ্গা আসছে আমাদের দেশে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হলে বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্ববাসীকে থাকতে হবে। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রীও বিশ্ববাসীকে পাশে পেতে যথেষ্ট সক্রিয় রয়েছেন। এখন প্রস্তাব দেওয়ার পর তা মিয়ানমার মানলেই সবপক্ষের ভালো।
২০১৭ সালের আগস্টে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিলেও এর আগে থেকে এখানে তাদের বাস। এতদিন ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য হয়নি। কিন্তু এবার ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার চাপে ওষ্ঠাগত সমগ্র দেশ। এই জাতি জীবন বাঁচাতে আশ্রয় নিয়েও এখন আমাদের মাটিতে গেঁড়ে বসতে চাচ্ছে। অনেক দেশ তাদের পক্ষে কথা বললেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বুঝতে পারছে না।
এখন প্রধানমন্ত্রীর নিউইয়র্ক সফরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত পাওয়াই আমাদের প্রত্যাশা। একই সঙ্গে, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরানোও দেশবাসীর প্রাণের দাবি।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228