‘জিকা’ ঝুঁকিতে বাংলাদেশ
সচেতনতা প্রয়োজন এখনই
সম্পাদকীয়
🕐 ৯:৩৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৯
রোগ-জীবাণুর প্রাদুর্ভাবের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে প্রায়শই বাইরের দেশ থেকে আসা ভাইরাস মোকাবেলা করতে হয়। যেহেতু বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় আন্তর্জাতিক যোগাযোগের কোনো বিকল্প নেই, তাই যেসব রোগের জীবাণু বিদেশ থেকে বহন করে আনা হয়; সেক্ষেত্রে আমাদের নিজেদেরই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে।
পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, এডিস মশা থেকে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া হয় সে তথ্য এখন অনেকেরই জানা। কিন্তু এই মশা ‘জিকা’ নামে মারাত্মক এক রোগের জীবাণুও বহন করে। অথচ মানবদেহে জিকা শনাক্ত করার কোনো ধরনের ব্যবস্থা বাংলাদেশের হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে নেই। শুধু সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে জিকা শনাক্ত করার ব্যবস্থা রয়েছে। যে কারণে বাংলাদেশেও ভাইরাসজনিত রোগ জিকা’র ঝুঁকিতে রয়েছে। এর আগে ব্রাজিলে জিকার প্রাদুর্ভাবকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিইএইচও) ‘জরুরি অবস্থা’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল। সংস্থাটি বলছে, এখন জিকা বাংলাদেশ সংলগ্ন ভারত এবং নেপাল পর্যন্ত চলে এসেছে।
এদিকে বছর দুয়েক আগে বাংলাদেশের সিলেটে জিকা ভাইরাসের নমুনা পাওয়া যায়। আর জিকা ভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় উগান্ডায় ১৯৪৭ সালে এক বানরের শরীরে। মানবদেহে এটি প্রথম শনাক্ত হয় নাইজেরিয়াতে ১৯৫৪ সালে। এরপর আফ্রিকাসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলেও এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেখা দেয়। এর সবচাইতে বড় প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় ব্রাজিলে ২০১৫ সালে।
জিকায় আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলো হলো- হালকা জ্বর, চোখে ব্যথা ও লালচে রং, মাথাব্যথা, গিঁটে গিঁটে ব্যথা এবং শরীরে র্যাশ। জিকার কারণে ২০১৫ ও ১৬ সালের দিকে ব্রাজিলে চার হাজারের মতো শিশু শারীরিক সমস্যা নিয়ে জন্মেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্বের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি শহরে এডিস মশার যে ঘনত্ব রয়েছে তা অনেক বেশি। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার সঙ্গে কোনোভাবে যদি এই ভাইরাসটা বাংলাদেশে চলে আসে তাহলে কিন্তু এটা আমাদের দেশে ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে পারে।’
সময়মতো সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই। এর আগে বিশেষজ্ঞরা ডেঙ্গুজ্বর নিয়ে সতর্ক করেছিলেন, কিন্তু সেটি আমলে নেওয়া হয়নি। আমরা আশা করব সরকার ‘জিকা’ ভাইরাসকে অবহেলা না করে রোগটি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228