ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অভিভাবককে অপমান

পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়

সম্পাদকীয়
🕐 ১০:০৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯

শিক্ষা অর্জনের জন্য পিতা-মাতা সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠান। সে কারণে প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থায় একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষা প্রক্রিয়ার সঙ্গে অভিভাবকের সরাসরি সম্পৃক্ততা থাকে। এর ফলে শিক্ষা কার্যক্রমের সরাসরি বহিঃপ্রকাশ হিসেবে পরীক্ষার ফলাফল সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগও স্থাপন করে থাকেন। ফলাফল ভালো হলে যেমন শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানতে পারেন, তেমনি ফলাফল খারাপ হলেও অভিভাবকরা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অবহিত হন। এটি খুব স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও রেজাল্ট খারাপ হওয়ার দরুণ অভিভাবকদের অপমান করার বিষয়টি হঠাৎ করে সামনে চলে আসে।

পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, শিক্ষকের হাতে অভিভাবকের অপমান সইতে না পেরে এবার কলেজেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে রাজধানীর মিরপুরে বনফুল আদিবাসী গ্রীন হার্ট কলেজের এক শিক্ষার্থী। পরীক্ষায় ফল খারাপ করায় শ্রেণিশিক্ষক ফোন করে তার মাকে অপমান করায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার শাহরিয়ার আলম আকাশ নামে কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ওই শিক্ষার্থী তৃতীয়তলার সিঁড়ি থেকে পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় আহত আকাশকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রাখা রয়েছে। শিক্ষকের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে এবং মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ায় কলেজটিতে ভাঙচুরও চালায় সহপাঠীসহ শিক্ষার্থীর।

এর আগে গত বছর ২ ডিসেম্বর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর বাবা-মাকে স্কুলে ডেকে নিয়ে অপমান করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষার হলে সঙ্গে মোবাইল ফোন পাওয়ায় অরিত্রীর অভিভাবকদের ডেকে টিসি দিয়ে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়। সেই ক্ষোভ ও অপমানে পরদিন শান্তিনগরের নিজেদের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে অরিত্রী। এর নয় মাসের মাথায় বনফুল আদিবাসী গ্রীন হার্ট কলেজে অভিভাবক অপমানের ঘটনা ঘটল।

আসলে শিক্ষা কার্যক্রমের ক্ষেত্রে ফলাফল খারাপ হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। একটি প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থী একরকম মেধাবী হয় না। এ বাস্তবতা উপলব্ধি করে দুর্বল শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার উন্নতি ঘটানোর জন্য শিক্ষক ও অভিভাবকের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। এজন্য পরমতসহিষ্ণুতা ও অভিভাবকদের অপমান করে শিক্ষার্থীদের দুর্বল জায়গায় আঘাত করা কিছুতেই যৌক্তিক আচরণের মধ্যে পড়ে না। আমরা আশা করব, একবিংশ শতাব্দীর এই যুগে শিক্ষকরা অভিভাবকদের অপমান না করে গ্রহণযোগ্যভাবে শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্যোগী হবেন।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper