রোহিঙ্গাদের হাতে স্মার্টকার্ড
প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখুন
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:০০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯
মানবিক কারণে নিজভূমি থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেওয়া হলেও তাদের একটি অংশ অবৈধভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এর ফলে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই রোহিঙ্গাদের অপরাধ সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে আরও সতর্ক থাকতে হবে। তবে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সর্বাগ্রে অপরাধীদের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের কর্মী এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের যোগসাজশে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র পাচ্ছে বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কক্সবাজারের টেকনাফে যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক হত্যার প্রধান আসামি রোহিঙ্গা যুবক নুর মোহাম্মদ ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের পর স্মার্টকার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র) উদ্ধার নিয়ে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। সেই ঘটনার পর পর শুরু হয় তদন্ত। গত রোববার নগরীর লাভলেইনে জেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে গিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা কথা বলার পর দুদকের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরিফ উদ্দিন এ কথা জানান।
তিনি বলেন, জেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে ভোটার তালিকার কাজে ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি ল্যাপটপের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না ২০১৫ সালের পর থেকে। এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। এসব ল্যাপটপের তথ্য নির্বাচন অফিস কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানেন না। রোহিঙ্গারা ভোটার হয়ে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে পাসপোর্ট করতে যাচ্ছে। এমন ৫৪ জনের তথ্য চট্টগ্রামের মনসুরাবাদ পাসপোর্ট অফিস থেকে দুদককে দেওয়া হয়েছে।
রোহিঙ্গারা কাদের সহায়তায় এনআইডি বা স্মার্টকার্ড পাচ্ছে তাদের ধরতে চায় দুদক। নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের কেউ জড়িত কি-না- তা তারা খতিয়ে দেখছেন। নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের কর্মচারী, সিটি করপোরেশন এবং জেলা পর্যায়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের যোগসাজশ থাকার বিষয়টি প্রাথমিক তদন্তে এসেছে। শুধু চট্টগ্রাম নয়, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলায় রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার ঘটনাগুলোও দুদক খতিয়ে দেখছে। এদিকে নাগরিকত্ব পেলে বাংলাদেশ থেকে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়েছে রোহিঙ্গারা। চীনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মত বিনিময়ের সময় এ কথা জানান তারা।
গত রোববার বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের নেতৃত্ব চীনের প্রতিনিধি দল বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়া নো-ম্যানস ল্যান্ডে আটকে থাকা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব ফিরে পেলে মিয়ানমারে যেতে রাজি হন। প্রকৃতপক্ষে রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের সিদ্ধান্তই সময়োপযোগী বলে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে কূটনৈতিক তৎপরতার কোনো বিকল্প নেই। কারণ খুব সহজে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হবে না। এজন্য সরকার ক্লান্তিহীন প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে আমরা সেটিই প্রত্যাশা করব।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228