ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কিশোর গ্যাং কালচার

কঠোর পদক্ষেপ কাম্য

সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:৫৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৯

শিশু-কিশোররা একটি দেশের ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি। তাদের বেড়ে ওঠার সময়টা আমাদের নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে নতুন প্রজন্ম যেন কোনো রকম গাইডলাইন ছাড়া বেড়ে না ওঠে, সে দিকটি পরিবার থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও খেয়াল রাখতে হবে। বর্তমান সময়ে কিশোরদের বিপথে যাওয়ার অনেক পথ খোলা রয়েছে। এজন্য কিশোরদের আলোকিত জীবনের জন্য অভিভাবক হিসেবে পরিবারের কর্তাদের দেখভালের বিষয়টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সেইসঙ্গে রাষ্ট্রকেও এ প্রেক্ষিতে সজাগ থাকতে হবে।

খোলা কাগজে প্রকাশ, রাজধানীতে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং কালচার। এলাকায় প্রভাব বিস্তার, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা ও হত্যাসহ বড় ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার হয়েছে তিনশ’র অধিক গ্যাং কালচার সদস্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, আইনের কাছে অপরাধ অপরাধই। হোক সেটা ছোট কিংবা বড়। একজন অপরাধীকে অপরাধের বিবেচনায় আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কিশোর অপরাধের দায় নিতে হবে পরিবার আর রাষ্ট্রকেই। তবে এই গ্যাং তৈরির নেপথ্যে কারা, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঢাকাসহ সারাদেশে এই গ্যাং কালচার বিস্তৃত থাকলেও ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে রাজধানীর উত্তরায় স্কুলছাত্র আদনান হত্যার পর আলোচনায় আসে কিশোর গ্যাং কালচারের বিষয়টি। বিভিন্ন বাহিনীর অভিযানের পর বর্তমানে প্রায় পঞ্চাশের অধিক গ্যাংয়ের সন্ধান পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তার মধ্যে ডিসকো বয়েস, নিউ নাইন স্টার, নিউ আইকন, ফাস্ট হিটার বস, তুফান গ্রুপ, স্টার বন্ড, মোল্লা রাব্বী, বাংলা গ্রুপ, লারা দে গ্রুপ, ভাণ্ডারী গ্রুপ, যমজ ভাই, ডেবিল কিং ফুল পার্টি ছাড়াও বেশকিছু কিশোর গ্যাং আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এলাকাভিত্তিক অপরাধ, প্রভাব বিস্তার, ইভটিজিং ও মাদক ব্যবসাসহ খুন-খারাবির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে তারা। সর্বশেষ মোহাম্মদপুরে মহসীন আলী নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে এই ধরনের গ্যাং কালচারের কারণে। যারা এসব কালচারের সঙ্গে জড়িত হচ্ছে তাদের বেশিরভাগের বয়সই ১৮ বছরের নিচে।

সমাজে বিদ্যমান এমন চিত্র আমাদের জন্য উদ্বেগজনক। কারণ কিশোররা বিপথে গেলে তা আমাদের জন্য মোটেও ভালো কোনো ফলাফল বয়ে আনবে না। এ কারণে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে অনেক কিছুই করণীয় রয়েছে। তবে রাষ্ট্র কর্তৃক আইন প্রয়োগের পাশাপাশি আমাদের পরিবারের অভিভাবকদের করণীয় এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একজন কিশোরের বেড়ে ওঠার সময়টিতে তার পাশে থাকার জন্য সবচেয়ে বেশি সুযোগ থাকে তার পরিবারের মানুষের।

এ সময়ে পরিবারের গাইডলাইন থেকে বঞ্চিত হলে কিশোরদের বিপথে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। তাই কিশোরদের মাঝে মানবিক মূল্যবোধ ও পরমতসহিষ্ণুতা সৃষ্টিতে পরিবারের যেমন মুখ্য ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন, তেমনি তারা যেন অপরাধে না জড়ায় সেজন্য রাষ্ট্রকে কঠোর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper