ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

প্রশ্নবিদ্ধ কাউন্সিলরদের ভূমিকা

জবাবদিহিতা নিশ্চিত করুন

সম্পাদকীয়-১
🕐 ১০:০৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৯

রাষ্ট্র পরিচালনার শাসনকাঠামোতে নগর ব্যবস্থাপনায় মেয়র ও কাউন্সিলরদের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে তারা সুষম বণ্টন ও সমন্বয় নিশ্চিত করে নগর উন্নয়নে যথোপযুক্ত ভূমিকা রাখবেন, এটিই জনগণের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতাকে নিশ্চিত করে। তবে ক্ষমতার কাঠামোতে জনপ্রতিনিধি হয়ে ওঠার যে প্রক্রিয়া, তাতে মেয়রের সঙ্গে শুধু কাউন্সিলরদের দূরত্ব তৈরি হয় না বরং কাউন্সিলর হওয়ার পর স্থানীয় জনগণের সঙ্গে দূরত্বের বিষয়টিও সামনে চলে আসে। এর ফলে জনগণ নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত হন।

পত্রিকায় প্রকাশ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বাজেট ঘোষণার পর আমন্ত্রিত সাংবাদিকরা ডেঙ্গু পরিস্থিতি ও মশা নিধনে নয়-ছয়, বর্জ্য অপসারণ ও পরিচ্ছন্নতার দুরবস্থা, বেহাল রাস্তাঘাটের বিষয়ে মেয়রকে প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করেন। মশা নিধন নিয়ে প্রশ্ন করায় ক্ষিপ্ত হয়ে কাউন্সিলররা দলবেঁধে তেড়ে যান প্রশ্নকারী সাংবাদিকদের দিকে। সিটি করপোরেশনের কর্মী ও কয়েকজন সাংবাদিক তাদের ঠেকাতে গিয়ে লাঞ্ছনার শিকার হন। মেয়র খোকন মাইক্রোফোনে গলা চড়িয়ে কাউন্সিলরদের নিবৃত করেন। এ ঘটনার পর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের কাজ কী তা নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে ছোট ইউনিট হিসেবে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-শিক্ষামূলক কাজ এবং উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্র হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে জন্ম-মৃত্যুর নিবন্ধন, চারিত্রিক সনদ দেওয়ার মতো কর্মকাণ্ড ছাড়া অন্য কোনো ভূমিকা খুঁজে পাওয়া মুশকিল ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের। যদিও ২০১৭ সাল থেকে মশক নিধন কর্মী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে কাউন্সিলরদের হাতে। কিন্তু নগর ব্যবস্থাপনার এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজের ক্ষেত্রেই চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন অধিকাংশ কাউন্সিলর। ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নিধনে আলাদা ব্যবস্থাপনা রয়েছে।

এ ক্ষেত্রে জনগণকে সম্পৃক্ত করা না গেলে সফলতা পাওয়ার কোনো পথ নেই বলে জানিয়েছেন দেশি-বিদেশি কীটতত্ত্ববিদেরা। কমিউনিটি বা জনগণকে সম্পৃক্ত করার কাজে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সক্রিয়তা, সদিচ্ছা জরুরি। কিন্তু ডেঙ্গু মহামারী আকারে ছড়িয়ে যাওয়ার পরও দুই সিটির সিংহ ভাগ কাউন্সিলরকে মাঠে দেখা যায়নি। যারাও ছিলেন তাদের বেশির ভাগ শোডাউনের মতো কাজে যতটা মগ্ন ছিলেন ততটা আন্তরিক ছিলেন না মশা নিধন তদারকির কাজে। নিজেদের ওয়ার্ডে মশকনিধনকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রেও অভিজ্ঞতার চেয়ে রাজনৈতিক পরিচয় গুরুত্ব পেয়েছে তাদের কাছে। ফলে এ খাতে একগাদা টাকার অপচয় হলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।

এরকম ভারসাম্যহীন দৃশ্য নগর উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক। কারণ কাউন্সিলরদের কাজ নিয়ে জবাবদিহিতা থাকতে হবে। জনগণের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য এজন্য প্রয়োজনে সরকারের কঠোর ভূমিকা গ্রহণ করার কোনো বিকল্প নেই। আমরা নগর ব্যবস্থাপনায় মেয়র ও কাউন্সিলরদের যৌথ সমন্বয়মূলক ভূমিকা দেখতে চাই।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper