বজ্রপাতে মৃত্যু
পরিবেশ বিপর্যয় রোধ করুন
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৮:৫৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৩, ২০১৯
বৈশ্বিক পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে পৃথিবীজুড়ে নানান প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়। এর মধ্যে খরা, বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিকম্প, বজ্রপাত, দাবানল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এখনো পৃথিবীর কোথাও না কোথাও প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংঘটিত হচ্ছে। আমাদের দেশেও বন্যা, বৃষ্টিপাত, বজ্রপাতে জানমালের ক্ষতি হচ্ছে।
সাম্প্রতিককালে বন্যায় প্রাণহানিসহ অনেক ক্ষতি হয়েছে। বাড়তি হিসেবে থেকে গেছে অসময়ে বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা। বিগত বছরগুলোতে এর পরিমাণ কম থাকলেও বছর বছর বজ্রপাতের প্রকোপ বাড়ছে। অপরিকল্পিত বৃক্ষ নিধন এবং ব্যাপকহারে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণই পরিবেশ বিপর্যয়ের প্রধানতম কারণ।
খোলা কাগজের প্রতিবেদন বলছে, গত বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে শুধু বজ্রপাতের কারণেই নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ভরা গ্রীষ্ম-বর্ষা মৌসুমেও বজ্রপাতে নিহতের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এই শরৎকালে এসেও বজ্রপাতে নিহতের ঘটনা কোনো স্বাভাবিক ব্যাপার নয়। এর সঙ্গে পরিবেশ বিপর্যয়ের প্রত্যক্ষ যোগসূত্র রয়েছে। যে স্থানে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটেছে সে জায়গাগুলোর বেশির ভাগই ফাঁকা। আশপাশে বাড়িঘর কিংবা গাছপালা থাকলে বজ্রপাতের প্রকোপ কমতো।
যত দিন যাচ্ছে তত বেশি বৃক্ষ নিধন হওয়ায় বজ্রপাতের প্রবণতা বাড়ছেই। আর এতেই মারা পড়ছেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষগুলো। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে হলে প্রাকৃতিকভাবেই উপায় খুঁজে বের করতে হবে। আর এর একমাত্র সমাধান গণহারে বৃক্ষরোপণ।
আমরা সবাই জানি, একটি দেশের ভূমির তুলনায় অন্তত ২৫ ভাগ বনাঞ্চল থাকা উচিত। দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে এর বিকল্প নেই। কিন্তু আমাদের দেশের হিসাব করলে তা অনেক নিচে। অর্থাৎ বিপদসীমার মধ্যে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা জেনেও বৃক্ষ নিধন হচ্ছে। চলমান উন্নয়নকাজ, দেশের মানুষের আবাসন চাহিদা পূরণ এবং শহরায়ন-নগরায়নের ফলে কাটা পড়ছে গাছ। অথচ, কোনোভাবেই বাড়ছে না এর পরিমাণ। দিন দিন এভাবে গাছের সংখ্যা কমতে থাকলে সামনের দিনগুলোতে বন্যা, ক্ষরা, বজ্রপাতে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে তা অনায়াসে বলা যায়।
এখন থেকেই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ব্যাপারে সচেতন না হলে সামনের দিনগুলোতে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা দেবে। এরই মধ্যে বিশ^জুড়ে ভয়ানক প্রাকৃতিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কোথাও দাবানল, কোথাও বন্যা, কোথাও খরায় হুমকির মুখে পড়ছে মানবসভ্যতা। মানুষই যেহেতু পরিবেশের ক্ষতি করে চলেছে তাই এর থেকে মুক্তি পেতে হলে মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে।
আমাদের দেশে ভয়ানক প্রাকৃতিক বিপর্যয় যেমন- বন্যা, বজ্রপাত, খরা, অতিবৃষ্টি ইত্যাদি রোধ করতে বৃক্ষরোপণসহ আরও কিছু উদ্যোগ নিতে হবে। সরকার সংশ্লিষ্ট ছাড়াও ব্যক্তিগত উদ্যোগে ব্যাপকহারে গাছপালা রোপণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, মৃত্যুর পরিমাণ কমিয়ে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হলে বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228