ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ঘুষ মানেই অপরাধ

কোনো ছাড় নয়

সম্পাদকীয়-১
🕐 ৮:৩০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০১৯

ঘুষ মানেই যে অপরাধ-দুর্নীতি সে কথা নতুন কিছু নয়। তারপরও প্রধানমন্ত্রী আবার আমাদের তা মনে করিয়ে দিলেন। সরকার, প্রশাসন এবং বেসরকারি পর্যায়ে ঘুষ লেনদেন জালের মতোই ছড়িয়ে আছে। আদতে ঘুষবাণিজ্য নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্চ না হলেও কারও কাছে অজানা নেই। কোনোভাবেই এর লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। যারা নিয়ন্ত্রণে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করবেন বা করছেন অনেক ক্ষেত্রে তারাই এর সঙ্গে জড়িত। সহনীয় কিংবা অসহনীয় ব্যাপার নয়, ঘুষ লেনদেনকারীরা সমাজের আগাছা। তারাই কলুষিত করছে দেশের অগ্রযাত্রা।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘যে ঘুষ নেবে তার বিরুদ্ধে তো ব্যবস্থা নিতে হবেই, আর যে দেবে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ, দুজনই অপরাধী। বিষয়টা মাথায় রেখে সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’ এক জীবনে ঘুষ নিয়ে আয় করা বিপুল পরিমাণ অর্থ সঙ্গে নিয়ে যে পরপারে যাওয়া যায় না সে কথাও তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- কারা ঘুষ নেবে না? আর কারা ঘুষ দেবে না? উত্তর পাওয়া জটিল কিছু নয়। সরকারি কাজের হিসাব করলে দেখা যায়, প্রতিটি ক্ষেত্রেই কম-বেশি ঘুষ লেনদেন হয়। সরকারি প্রায় প্রতিটি প্রকল্প, পেনশনের টাকা প্রাপ্তি, ভূমি নিয়ে যত কাজ, সমাজ সেবা-সড়ক ও জনপথ বিভাগ; কোথায় নেই ঘুষের চিত্র।

বলতেই হয়, যারা ঘুষ লেনদেন জাতীয় দুর্নীতি বন্ধ করবেন তারাও অভিযুক্ত হচ্ছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের লোকজন সক্রিয় হলেও সেখানেও অভিযুক্ত রয়েছেন। প্রশাসনে নিযুক্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ব্যাপক ঘুষ বাণিজ্য করেন। জেলখানাগুলো তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ঘুষের লেনদেনের একটি প্রধান কারণ হলো ‘অর্থে বিনিময়ে চাকরি’। যারা ঘুষ দিয়ে চাকরি পান ‘শপথ’ নিয়ে তারাই এতে জড়ান। মাঝখানে ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সরকারি কিংবা প্রশাসনে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না। তা ওপেন সিক্রেট। নির্দিষ্ট করে না বললেও এ সত্য কারও অজানা নেই। অতি দুঃখের বিষয়, যারা ঘুষ লেনদেন বন্ধে সবচেয়ে জোরালো ভূমিকা রাখতে সক্ষম তারাই এতে জড়িত।

সরকার এবং প্রশাসনে অনেকেই আছেন যারা সৎ জীবনযাপন করছেন। যারা ঘুষের সঙ্গে জড়িত তারাই পরিবেশ নষ্ট করছে। ঘুষ বন্ধ না করা গেলে ভবিষ্যতে যত উন্নয়নই হোক তা সাধারণের কোনো উপকারে আসবে না। দুর্নীতি দমন কমিশন, সরকার এবং প্রশাসন উদ্যোগী হলেই কেবল ঘুষ লেনদেন বন্ধ করা সম্ভব। কঠোর আইন, জিরো টলারেন্স নিয়ে মাঠে নামলে নিঃসন্দেহে ঘুষ বাণিজ্য বন্ধ হবে। যেহেতু সরকারের কর্তাব্যক্তি ঘুষ নিয়ে কথা বলেছেন তাই তার হস্তক্ষেপেই বন্ধ হোক এ জাতীয় অনিয়ম-দুর্নীতি। সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন অপেক্ষায় আছে, ঘুষমুক্ত হবে দেশ।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper