টেঁটাযুদ্ধ বন্ধে শপথ
জাগ্রত হোক মূল্যবোধ
সম্পাদকীয়
🕐 ৮:১৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০১৯
আদি যুগে বহু বর্বরোচিত কাহিনী ঘটেছে। নানা ভাষাভাষীর মানুষের লোকগাথা এবং ইতিহাসে তার উদাহরণ রয়েছে। যুগের পরিক্রমায় পৃথিবী আজ মধ্য-আধুনিক পার করে অত্যাধুনিক যুগের দিকে ধাবমান। অনেক দেশে বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে ঘটে গেছে বিবর্তন। তবে এখনো পুরনো ধারা রয়ে গেছে অনেক জায়গায়। আমাদের দেশের কিছু অঞ্চলে সংঘটিত ‘টেঁটাযুদ্ধ’ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এর আগেও গ্রামবাসীর মধ্যে টেঁটা, তীর, বল্লমজাতীয় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। মারাও পড়েছেন অনেকে। সম্প্রতি একটি গ্রামের লোকজন টেঁটাযুদ্ধ বন্ধে শপথ নিয়েছেন। বিষয়টি অবশ্যই আশাজাগানিয়া।
খোলা কাগজ বলছে, নারায়ণগঞ্জের সীমান্তবর্তী অঞ্চল ও নরসিংদীতে টেঁটাযুদ্ধ একটি নিয়মিত ঘটনা। গণমাধ্যমেও মাঝে মধ্যেই এ তথ্য প্রচার হয়। কয়েকদিন আগেও তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে টেলিভিশনের খবরে গ্রামবাসীদের মধ্যে ভয়াবহ টেঁটাযুদ্ধ দেখা গেছে। কিন্তু এবার নরসিংদীর ‘আলোকবালি’ গ্রামের লোকজন টেঁটাযুদ্ধ বন্ধে শপথ নিয়েছেন। আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই। আদিম বর্বরতার ছাপ কাটিয়ে মানবিক দিক বিবেচনা করে তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন আধিপত্য বিস্তার কিংবা তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষ বাদ দিয়ে একটি সুস্থধারার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করে বিবাদপূর্ণ গ্রামবাসীদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। ভবিষ্যতে যেন এক গ্রামের মানুষের সঙ্গে অন্যগ্রামের মানুষের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে সে বিষয়টিই মুখ্য।
এখনো দেশের অনেক এলাকা এবং স্থানীয়দের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। কয়েক দিন পরপর দুই গ্রামের সংঘর্ষে নিহতের খবর আসে। এ জাতীয় ঘটনা দূর করতে উদ্যোগী হতে হবে স্থানীয় সরকার-প্রশাসনসহ সব পক্ষকে। বিবাদ-সংঘর্ষ যে কোনো ভালো ফল বয়ে আনে না তা অনুধাবন করতে হবে। মানুষে মানুষে প্রীতি এবং ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। দেশবাসী বিষয়টি মাথায় নিয়ে সংঘর্ষ এড়িয়ে চলবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।
আমরা জানি দেশের বিচ্ছিন্ন এবং সংঘর্ষজনিত ঘটনা রুখতে প্রশাসনের লোকজন যথেষ্ট তৎপর। কিন্তু যখন বিপুল পরিমাণ লোকজন বিরোধে জড়ায় তখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কষ্ঠকর। এজন্য প্রশাসনের প্রতি স্থানীয়দেরও সাহায্যে হাত এগিয়ে দিতে হবে। একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে হলে বিরোধ এড়ানোর বিকল্প নেই। এখনো যে সব বিরোধপূর্ণ এলাকা রয়েছে সেখানে স্থানীয় লোকজন এবং প্রশাসনের উদ্যোগে একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
আলোকবাড়ির মতো প্রতিটি গ্রামে বিরোধের অবসান করে শান্তি ফিরে আসুক, এই আমাদের প্রত্যাশা।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228