চামড়া নিয়ে নয়ছয় কেন
এতিমখানার দুর্ভোগ লাঘব করুন
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:৩৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৬, ২০১৯
এবারের ঈদুল আজহার কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে বিপর্যয় দেখা গেছে। অস্বাভাবিক মূল্যহ্রাস এবং সিন্ডিকেটের প্রভাবে চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বেশিরভাগ কোরবানি দাতা এবং চামড়া গ্রহীতা। ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে না পেরে অনেকেই মাটিচাপা দিয়েছেন কাঁচা চামড়া। যথাযথ উপায়ে সংরক্ষণ এবং বিপণনের অভাবেও নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। এদিকে দেশব্যাপী থাকা মাদ্রাসা এবং এতিমখানাগুলোতেও স্থানীয়রা কোরবানির পশুর চামড়া দান করেছেন। কিন্তু সেগুলো বিক্রি করতে না পেরে বছরব্যাপী খরচের টাকা জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে মাদ্রাসা-এতিমখানা।
ঈদের আগে সরকার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিলেও তা কাজে আসেনি। উল্টো ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের প্রভাবে সে দাম রেকর্ড পরিমাণ নিচে নেমে গেছে। এতে এক রকম হতাশ হয়েই চামড়া মাটিচাপা দিয়েছেন অনেকেই। অথচ এমনটি হওয়া উচিত ছিল না। সারা বছরের চামড়ার জোগান এই ঈদে পূরণ হয়। একই সঙ্গে এই চামড়া দিয়ে বানানো অনেক পণ্য দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি হয়। অথচ, এবার সে বিষয়ে কারও কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই।
দেশের প্রতিটি উপজেলায় একাধিক মাদ্রাসা-এতিমখানা রয়েছে। তারাও ব্যানার পোস্টার ছাপিয়ে চামড়া সংগ্রহে আহ্বান জানিয়েছিল। প্রতিবছরের মতো এবারও সাধারণ মানুষ এসব প্রতিষ্ঠানে চামড়া দান করেছেন। কিন্তু, ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে না পেরে বিপাকে পড়েছে মাদ্রাসা-এতিমখানা কর্তৃপক্ষ। এমনিতে তারা মানুষের সহায়তা এবং ফান্ডের ওপর নির্ভর করে চলে। কোরবানির পশুর চামড়াও তাদের বড় আয়ের উৎস। অথচ এবার তা থেকেও উপকার পাচ্ছে না মাদ্রাসা-এতিমখানাগুলো। এ পর্যায়ে খরচের টাকা জোগাড় করতেই হিমশিম খাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
গত বছরও মাদ্রাসা-এতিমখানা কর্তৃপক্ষ চামড়া সংগ্রহ করে বিপাকে পড়েছিল। এবারও ধারাবাহিকভাবে একই ঘটনা ঘটল। বিভিন্ন স্থান থেকে চামড়া সংগ্রহ করেও লাভবান হওয়া তো দূরের কথা উল্টো ক্ষতির মুখ দেখেছে মাদ্রাসা এতিমখানা কর্তৃপক্ষ। অনেক প্রতিষ্ঠান বাধ্য হয়ে মাটিতে পুঁতে এবং রাস্তায় ফেলে দিয়েছে কাঁচা চামড়া। আমরা এর আগেও ধান-দুধ-সবজিসহ অনেক কিছুই নষ্ট হতে দেখেছি। কিন্তু সরকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে তেমন শক্তিশালী ভূমিকা দেখিনি। ব্যবসায়ীরা প্রতি স্থানে লাভবান হলেও সবকিছুতেই ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ। চামড়া নিয়ে এ জাতীয় নয়ছয় কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। এ জন্য সরকারপক্ষকেই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে মাদ্রাসা-এতিমখানার মতো যে সব দাতব্য প্রতিষ্ঠানের জন্য ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে হবে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228