নিরাপদ দুধের নিশ্চয়তা
জরুরি পদক্ষেপ নিন
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:০৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৯, ২০১৯
দুধ বিশ্বজুড়েই আদর্শ খাবার হিসেবে স্বীকৃত। বিশেষ করে দৈনন্দিন জীবনে পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য দুধের বিকল্প নেই। যুগ যুগ ধরেই আমাদের জীবনযাপনে খাবারের তালিকায় দুধ স্থান পেয়ে আসছে। আমরা দুধ পান করাকে আমাদের জীবনের অংশ করে নিয়েছি। তবে ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় মানুষের দুর্নীতিগ্রস্ত অধ্যায় দুধকেও আক্রান্ত করেছে। এতদিন দুধের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য পানি মেশানোর বিষয়টি থাকলেও এখন আধুনিক বিজ্ঞানের সহায়তায় দুধ তৈরি করার সময়েই দুধে মেশানো হচ্ছে নানাবিধ রাসায়নিক পদার্থের ভেজাল।
খোলা কাগজে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের দুই দফা গবেষণায় পাস্তুরিত ও অপাস্তুরিত দুধের নমুনায় মিলেছে অ্যান্টিবায়েটিক ও ডিটারজেন্ট। এর আগে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতিবেদনে দুধে সিসা, ক্যাডমিয়ামের মতো ধাতুর পাশাপাশি অণুজীব মেলে। এদিকে সিসাসহ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান থাকায় গতকাল সরকারের মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসটিআইয়ের অনুমোদিত ১৪ কোম্পানির সবগুলোকেই পাস্তুরিত দুধ উৎপাদন, সরবরাহ, বিপণন ও বিতরণ এবং কেনা বা খাওয়া ৫ সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এদিকে সুস্থ জীবনের জন্য খুব প্রয়োজনীয় খাবার হলেও দুধ উৎপাদনে অনেকটাই পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। চাহিদার অর্ধেকেরও কম দুধ উৎপাদন হয় দেশে। আর দুধ খাওয়ার দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। পর্যাপ্ত দুধ না খাওয়ায় অপুষ্টিজনিত নানা সমস্যা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়াসহ মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এদেশের শিশুদের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে এখনো দেশি জাতের গাভী পালন বেশি হয়। এ কারণে গাভীর তুলনায় দুধ উৎপাদন কম। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ২০১৭ সালের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে তরল দুধের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ১ কোটি ৪৭ লাখ টন। এর বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৭২ লাখ ৭৫ হাজার টন। ফলে ঘাটতি থাকছে ৭৪ দশমিক ১৬ লাখ টন। ঘাটতি এ দুধের চাহিদা পূরণ হয় আমদানি করা গুঁড়োদুধে। উৎপাদনের মতো দুধ খাওয়াতেও পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
এছাড়া তরল দুধের চাহিদা কিন্তু গুঁড়োদুধের মাধ্যমে পূরণ হয় না। সুষম পুষ্টির জন্য গরুর খাঁটি দুধের ওপরেই নির্ভর করতে হয়। ইতোপূর্বে অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের দুধের ভেজাল সংক্রান্ত পরীক্ষাকে যেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়, তাতেই অনুমিত হয়েছিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিরাপদ দুধ নিয়ে উদাসীন অথবা দুধে ভেজালের ক্ষেত্রে অনেক প্রভাবশালী চক্র জড়িত রয়েছে। যেহেতু নাগরিকদের সুস্বাস্থ্যের জন্য দুধের বিকল্প কিছু নেই, তাই আমরা প্রত্যাশা করি নিরাপদ দুধের জন্য করণীয় নির্ধারণে সরকার অবশ্যই কঠোর ভূমিকা পালন করবে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228