ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বন্যার দুর্ভোগেও কিস্তির ঘা

মানবিক দিক বিবেচনায় নিন

সম্পাদকীয়
🕐 ৯:১৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৭, ২০১৯

তিস্তা-ব্রহ্মপুত্রের বানে এবার উত্তরবঙ্গও ভেসে গেছে। পিছিয়ে থাকা উত্তরের বিপুলসংখ্যক মানুষ বন্যার কারণে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে কিছু ত্রাণ সহায়তা মিললেও পিছু ছাড়ছে না এনজিওর কিস্তির তাড়া। সহায়-সম্বল, ঘরবাড়ি, ফসল, ব্যবসা হারিয়ে এখন আশ্রিত হয়ে কোনোমতে টিকে আছেন উত্তর-পূর্বের বেশ কয়েকটি জেলার মানুষ। কিন্তু আশ্রিত হয়েও কিস্তির ঘা থেকে তাদের মুক্তি মিলছে না। এই বন্যার মধ্যেই স্থানীয় এনজিওকর্মীরা টাকা তুলতে বানভাসি মানুষের কাছে ধর্না দিচ্ছে।

খোলা কাগজের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে দুর্যোগের সময়েও এনজিওর কিস্তি তোলার বিষয়টি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বেশির ভাগই কৃষিজীবী এবং প্রান্তিক মানুষ। সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ তুলে আয়ের সন্ধানে গবাদিপশু পালন, খেতে ফসল চাষ, ব্যবসা করলেও বন্যার কারণে তা বন্ধ হয়ে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তাদের আয়ের পথও বন্ধ। এই পর্যায়ে ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ রেখেছে। কিন্তু, বন্ধ হয়নি এনজিওগুলোর কিস্তির তদারকি। অন্তত মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে তাদের উচিত কিস্তি তোলা বন্ধ রাখা।

বন্যা এখনো পিছু ছাড়েনি। কোথাও উন্নতি হলেও অনেক স্থান নতুন করে ডুবছে। আর তাতেই খেয়ে-পরে বাঁচার অবলম্বন খুঁজছে বন্যাপীড়িত মানুষ। এর মধ্যে ঋণের কিস্তির চাপ মড়া নয় বরং ‘গরিবের উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে বন্যায় সীমাহীন দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে মরিয়া বানভাসিরা, অন্যদিকে কিস্তির চাপ সামলাতেও অন্য এনজিও থেকে নিচ্ছেন ঋণ। অনেকেই জমানো সঞ্চয় বা অতি জরুরি অর্থ খরচ করছেন। এরপর, যখন বন্যা শেষ হবে তখন এই মানুষগুলোর কী হবে-তা ভাবছে না তৎসংশ্লিষ্ট এনজিওগুলো।

আমরা বলতে চাই, এনজিওগুলো যেমন দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে উপকার করে, ঠিক তেমনি এই দুর্যোগেও কিস্তির ‘জাল’ ফেলা বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে শুধু কিস্তি বন্ধ নয়, প্রয়োজনে বানভাসিদের ত্রাণ সহায়তা দিতে হবে। সারা বছর মুনাফা লাভ করেও দুর্যোগে পাশে থাকলে এনজিওগুলোতে ভরসা পাবে সবাই। তাছাড়া, মানবিক দিক বিবেচনা করেও এখন থেকেই কিস্তি তোলা বন্ধ রাখতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে অন্য ব্যাংকগুলো যেমন করে ঋণের টাকা তোলা বন্ধ রেখেছে, তেমনি এনজিওগুলোও শিগগিরই একই কাজ করবে বলে বিশ্বাস।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper