সাত কলেজের ভোগান্তি
দ্রুত সমস্যার সমাধান জরুরি
সম্পাদকীয়
🕐 ৯:৩৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৮, ২০১৯
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা রাজধানীর অভ্যন্তরীণ সাতটি কলেজ বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নিয়ন্ত্রণাধীন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর ২০১৭ সালে এই কলেজগুলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে দেওয়া হলে দেখা দিতে থাকে বিপত্তি। সময়মতো পরীক্ষা না হওয়া, সেশনজট, রেজাল্ট প্রাপ্তিতে ভোগান্তি, গণহারে ফেলসহ নানা ঝামেলার সম্মুখীন হন কলেজসমূহের শিক্ষার্থীরা। উচ্চতর ডিগ্রি নিতে গিয়ে বর্ণনাতীত হয়রানির শিকার হচ্ছেন এই কলেজে পড়ুয়ারা। যে কারণে কিছুদিন পরপর রাস্তায় নামছে ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে ঢাবির শিক্ষার্থীরাও সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে অবরোধ-আন্দোলন করছেন।
খোলা কাগজে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কোনো নির্দেশনা ছাড়াই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভক্ত করা হয়েছে রাজধানীর সরকারি কলেজগুলোকে। এতেই সাত কলেজের দুই লাখ শিক্ষার্থীর দশা চরমে পৌঁছেছে। একই ভোগান্তির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে খোদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও। শুধুমাত্র এই কারণেই সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। সাত কলেজে স্নাতক, ডিগ্রি (পাস কোর্স) এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে লেখাপড়া এবং তা শেষ করতে গিয়ে শিক্ষার্থীর পরিস্থিতি বেহাল হচ্ছে দিন দিন। পাশাপাশি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের মধ্য দিয়ে অবরোধ করছেন। এই পরিস্থিতিতে উভয় সংকটে পড়েছে ঢাবিসহ সাত কলেজ।
উচ্চতর সার্টিফিকেট লাভ করে শিক্ষার্থীদের যখন চাকরির প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তখনো প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখা, পরীক্ষা, রেজাল্ট প্রাপ্তিতে বিলম্ব এবং অকৃতকার্য হওয়া নিয়ে শঙ্কায় থাকতে হচ্ছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের। এর সমাধান কীভাবে হবে তা নিয়েও কার্যকর পরিকল্পনা দেখা যাচ্ছে না। একদিকে সময় চেয়ে ঢাবি কর্তৃপক্ষের গা-ছাড়া অবস্থানের কারণে ভুগছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে, ক্রাশ প্রোগ্রাম চালু করে এগিয়ে গেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এক সময় সরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে নানান সমস্যার কথা প্রচলিত থাকলেও এখন তা কেটে গেছে। কিন্তু, তাদের হাতছাড়া হওয়া সাত কলেজের দুই লাখ শিক্ষার্থীর কপালে জুটছে চরম ভোগান্তি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হোক অথবা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়; অতি দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান জরুরি হয়ে পড়েছে। কেননা দিন দিন এর সঙ্গে যুক্ত হতে চলেছে আরও হাজার হাজার শিক্ষার্থী। তাছাড়া, শিক্ষাজীবন পার করতেই যদি এত ভোগান্তি পোহাতে হয় তাহলে চাকরির পড়া কিংবা অন্য সামাজিক কাজে শিক্ষার্থীরা মনোযোগ হারাবে। তাই হতাশা-দুর্ভোগ-অনিশ্চয়তাসহ সব ঝামেলা মিটিয়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন মলিন করতে হবে। এই সমস্যা সমাধানে ঢাবি, সাত কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যৌথ উদ্যোগ নিতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়; যার দায়িত্বেই দেওয়া হোক না কেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নিরাপদ শিক্ষাজীবন নিশ্চিতই সবচেয়ে জরুরি বিষয়।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228