ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বিচারকের সামনেই খুন

এত ঔদ্ধত্য কেন

সম্পাদকীয়
🕐 ১০:০৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৬, ২০১৯

অপরাধের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর তৎপরতায় পাকড়াওয়ের পর বিচারের সম্মুখীন হয় আসামি। গ্রেফতার-বিচারের পর অনেক পর্যায়ে আসামি বিভিন্নভাবে নেতিবাচক আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। তাই বলে আদালতে বিচারকের সামনে খুন! এমন ঔদ্ধত্য-স্পর্ধা অপরাধী পেল কোথায়? আর কীভাবেই-বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য থাকা অবস্থায় কুমিল্লায় আদালতে বিচারকের সামনে এক আসামি আরেক আসামিকে খুন করল? এ ঘটনায় যেমন করে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা, তেমনি আসামির সাহস দেখে প্রকম্পিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আসামি নিয়ে আতঙ্কে আছেন স্বয়ং বিচারকরাও।

খোলা কাগজের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত সোমবার কুমিল্লায় আদালত কক্ষে এজলাসের কাছে বিচারকের সামনেই একই মামলার আসামি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে অন্য আসামিকে। একটি হত্যা মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে হঠাৎ করে আসামিপক্ষের একজন তার সহযোগীকেই ছুরি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। এক পর্যায়ে দৌড়ে পালাতে গেলেও অন্য কক্ষে তাকে উপর্যুপরি আঘাতে মারাত্মক জখম করা হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে ভুক্তভুগীর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার সময় আদালতে আতঙ্ক দেখা দিলে পুলিশের এক সদস্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খুনিকে আটক করে। এখন কথা হচ্ছে, অপরাধীরা যদি বিচারের স্থানে গিয়েই এত ঔদ্ধত্য দেখায়, তবে বাইরে বের হলে তাদের হাত থেকে সাধারণ মানুষ কীভাবে রক্ষা পাবে?

এর আগেও বিচারকার্য চলাকালে কিংবা আদালত প্রাঙ্গণে আসামি এবং অভিযুক্তদের নেতিবাচক আচরণ দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আসামিদের নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট তৎপর থাকতেও আদালতের মতো সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এ জাতীয় ঘটনা মেনে নেওয়ার মতো নয়। বিচারপ্রার্থীরা যেখানে গিয়ে অন্যায়ের বিচার পাবে সেখানেই যদি খুনের মতো ঘটনা ঘটে, তাহলে নিরাপদ জায়গা কোথায়? তাছাড়া, আইনি হেফাজতে থাকাকালীন কুমিল্লার ওই আসামির কাছে কী করে ছুরির মতো অস্ত্র এলো, সে বিষয়টিও তদন্ত করে দেখতে হবে। এ ঘটনার পর সংশ্লিষ্টদের টনক নড়লেই পরিষ্কার হবে আদালতে খুনের ঘটনা।

আইন-বিচার সবার জন্য সমান। ধনী-গরিব, উঁচু-নীচু, জাত-পাতের ভেদাভেদ নেই এখানে। এক্ষেত্রে অপরাধের শিকার যারা হয়েছেন তাদের নিরাপত্তা এবং ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করাও আইন, আদালত, বিচারকের দায়িত্ব। কিন্তু এই কাজ করতে গিয়ে তারাই যদি হুমকি, জীবন সংকটের মুখোমুখি হন, তবে নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্ন আসা অমূলক নয়। তাছাড়া, কুমিল্লায় যে আসামিকে খুন করা হলো তার কাছ থেকেও হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেত। কিন্তু এখন আর তা সম্ভব নয়। তাই ভবিষ্যতে অন্তত আদালতের মতো স্থানে যেন এ জাতীয় ঘটনা না ঘটে, সেজন্য সংশ্লিষ্টদের আরও তৎপর থাকতে হবে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper