দেশ গড়ার নির্দেশনা
ডিসিদের অগ্রণী হতে হবে
সম্পাদকীয়
🕐 ১০:০২ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৫, ২০১৯
বাংলাদেশে স্তরভেদে বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডের সমন্বয়ে রাষ্ট্রকাঠামো গঠিত। বর্তমান আট বিভাগে মোট ৬৪টি জেলা রয়েছে। বিভাগ থেকে জেলাগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হয়। প্রথম শ্রেণির নাগরিক হিসেবে এসব জেলা নিয়ন্ত্রণের সার্বিক দায়িত্ব থাকে প্রশাসন নিযুক্ত প্রশাসকের ওপর। তারা হলেন জেলা প্রশাসক (ডিসি)। প্রতিটি জেলার নিয়ন্ত্রক হয়ে ভালো-মন্দের দায়িত্ব নেন তারা। জনপ্রতিনিধি এবং ডিসিদের হাত দিয়েই সার্বিক স্তর উন্নত হয়। জেলাপর্যায়ে ডিসিরাই মূলত প্রশাসনের মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। সম্প্রতি রাজধানীতে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী সমৃদ্ধ দেশ গড়তে তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।
খোলা কাগজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতেই ডিসিদের কাজ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। ৩১টি নির্দেশনায় কি করতে হবে, তার সার্বিক বিষয় তুলে ধরেন রাষ্ট্রপ্রধান। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এই সম্মেলনে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন এবং ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যে ডিসিদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে বলা হয়। যেহেতু ডিসিরাই জেলাভিত্তিক সর্বোচ্চ পদমর্যাদার প্রশাসনিক ব্যক্তি, তাই তাদের নির্দেশেই বেশির ভাগ ইতিবাচক কর্মকা- হওয়া সম্ভব। যা হচ্ছেও দীর্ঘদিন যাবৎ।
এই সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারি সেবা পেতে হয়রানি বন্ধ, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, মাদক-জঙ্গিবাদ নিমূল, অবকাঠামো-কর্মসংস্থানের উন্নয়ন, সুশাসন নিশ্চিত, কৃষির উন্নয়ন, গণসচেতনতা বৃদ্ধিতে ডিসিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও পরিবেশ রক্ষা, তৃণমূল পর্যায়ে যথাযথ সেবা নিশ্চিত, গ্রামীণ উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ, পিছিয়েপড়া গোষ্ঠীর উন্নয়ন এবং পুনর্বাসনে ডিসিদের কার্যকর ভূমিকা রাখতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। মাত্র ৩১টি নির্দেশনা ঠিকমতো পালন করা হলেই দেশের চিত্র পাল্টে যাবে। এখনো যে অনিয়ম-দুর্নীতি এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে ডিসিদের হাতেই তা নির্মূল হওয়া সম্ভব।
বলা প্রয়োজন, রাষ্ট্রকর্তৃক অবাধ ক্ষমতা দেওয়া সত্ত্বেও অনেক সময় অনেক জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া যায়। অনেক জেলায় ঘুষ-অনিয়মেও জড়ান ডিসিরা। এতে যেমন করে তাদের দুর্নাম হয়, তেমনি দেশে প্রকৃত উন্নয়ন ব্যাহত হয়। তা ছাড়া, ক্ষমতা-সুবিধা কোনোটিই কম ভোগ করেন না জেলা প্রশাসকরা। অথচ তাদের হাতে দুর্নীতি-অনিয়ম হওয়া খুবই অপ্রত্যাশিত ঘটনা। তারা শক্ত হাতে জেলার কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে নিয়ন্ত্রণ করলে সব অপরাধ নিশ্চিতভাবে অনেকাংশে কমবে। আর নেতিবাচক কর্মকর্তা কমলেই প্রকৃত উন্নয়নের চিত্র ভেসে উঠবে। শুধু দুর্নীতি-অনিয়ম বন্ধ করা গেলেই সরকারের লক্ষ্য অর্জনে আর কোনো বাধা থাকবে না। এক্ষেত্রে ডিসিদেরই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। শুধু সরকার নয়, জনগণও তাই প্রত্যাশা করে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228