ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

জলবায়ু পরিবর্তনে ভুগছে বিশ্ব

সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়া জরুরি

সম্পাদকীয়
🕐 ৯:৫৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০১৯

আইজ্যাক নিউটনের সূত্র অনুযায়ী, প্রত্যেক ক্রিয়ার একটি বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া রয়েছে। বিশ্বে জলবায়ুর প্রভাবও এই সূত্রের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। পরিবেশের ওপর মানুষের অত্যাচারে জলবায়ু রুষ্ট হয়ে পৃথিবীজুড়েই এর প্রভাব পড়ছে, কোথাও বাড়ছে কোথাও কমছে তাপমাত্রা। গাছপালা কমে যাওয়া, নগরায়ন-শিল্পায়ন, মাত্রাতিরিক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ ইত্যাদি কারণে বৈরী রূপ ধারণ করছে বায়ুমণ্ডল। এর সীমানা প্রাচীর না থাকায় প্রভাব পড়ছে বিশ্বজুড়ে। প্রকৃতি এবং পরিবেশ শান্ত রাখতে এক দেশ উদ্যোগ গ্রহণ করলেও অন্য দেশের উদাসীনতার খেসারত দিতে হচ্ছে সবাইকেই।

বিগত কয়েক বছরে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দেখা গেছে বেশি। এর পরিমাণ দিন দিন বাড়ছেই। চলচ্চিত্রের মতোই পৃথিবীর কোথাও তুমুল বৃষ্টিপাতে ভেসে যাচ্ছে অঞ্চল। আবার কোথাও দাবদাহে পুড়ছে দেশ। গত কয়েক মাসে এশিয়া, আমেরিকা, ইউরোপ, ওশেনিয়া, আফ্রিকা, এন্টার্কটিকা; সব মহাদেশেই আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে। এশিয়ার অনেক দেশেই বন্যা, বৃষ্টিপাত, ভূমিধসে নিহতের ঘটনা ঘটেছে। আর ইউরোপজুড়ে তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়েছে প্রাণীজগৎ। দক্ষিণের বরফ গলে সমুদ্রের পানি বাড়ছে। উত্তরে কোথাও বরফ জমছে আবার কোথাও গলে হ্রদ হচ্ছে। অর্থাৎ, পরিস্থিতি স্বাভাবিক নেই।

দিন যত পার হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বাড়ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে ভারী বর্ষণ এবং উজানের ঢলে তলিয়ে গেছে অনেক জেলা। একদিনে বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন ১৪ জন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বাসভবনেও ঢুকেছে পানি। গত মাসে চীন, জাপান, নেপালে আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসে নিহত হয়েছে শত শত মানুষ। প্রতিবেশী ভারতেও বৈরী পরিবেশ বিরাজ করছে। ইউরোপের জার্মানিতেও তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত। দেখা যাচ্ছে, পৃথিবীর কোথাও শাস্তিতে বাস করতে পারছে না সাধারণ মানুষ। কিন্তু সত্য হলো, শুধু মানুষের দ্বারাই পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। আর পরিবেশও মানুষের ওপর ভয়ংকর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।

বিশ্ববাসী খুব ভালোভাবেই বোঝে জলবায়ুর ভারসাম্য রাখতে কি করতে হবে। তাপরও বলা প্রয়োজন, পৃথিবীর তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে এবং বৈরী পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে গাছপালার ওপরই নির্ভর করতে হবে। যতই শিল্পায়ন-নগরায়ন করা হোক না কেন, গাছের বিকল্প পাওয়া যাবে না। অথচ আমরা মানুষজাতিই তা নিধন করছি। জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে বাতাসকে বিষিয়ে তুলছি দিন দিন। দিন দিন অক্সিজেনের পরিমাণ কমে এবং অন্য বায়বীয় গ্যাস বেড়ে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে পৃথিবীর প্রাণ হিসেবে খ্যাত সমুদ্র। সোজা কথায়, কোনো দেশের একার পক্ষে জলবায়ুর প্রভাব নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে বিশ্ববাসীকে এক ছাতার নিচে আসতে হবে এবং একটি জোরালো উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। যে উদ্যোগে জলবায়ু বিরূপ নয় জনগণের জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠবে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper