পুঁজিবাজারে দরপতন চলছেই
বিনিয়োগের নিরাপত্তা জরুরি
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৮:১৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১২, ২০১৯
ব্যবসা খাতে বিনিয়োগের জন্য নির্ভরযোগ্য স্থান পুঁজিবাজার। আর পুঁজিবাজারের ওপর নির্ভর করে অর্থনীতি শক্তিশালী হয়। বিভিন্ন কোম্পানি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করে। এর দাম বাড়লে বিনিয়োগকারী লাভের মুখ দেখে, আর কমলে ক্ষতি হয়। ২০১৯-২০ নতুন অর্থবছর শুরু হলো পুঁজিবাজারে দরপতন দিয়ে। এর আগের অর্থবছরের শেষ দিকেও দেখা গেছে একই চিত্র। ফলে বিনিয়োগ করে ধারাবাহিকভাবে লোকসান গুনছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তারা এখন দিশাহারা হয়ে বিনিয়োগের নিরাপত্তা চেয়ে মানববন্ধন, বিক্ষোভ এবং প্রতীকী গণঅনশন করছেন।
খোলা কাগজের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নতুন বাজেট প্রস্তাবের দিন থেকেই পুঁজিবাজারে দাম পড়তে শুরু করে। এরপর বাজেট পাস হলেও সেখান থেকে সুবিধা পাননি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। গত বছর এই সময় অর্থাৎ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় শেয়ার বাজারে দরপতন হয়। সে সময় মাত্র কয়েকদিনে বাজার থেকে উধাও হয়ে যায় প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা। গত এক বছরে মাঝে কয়েকমাস এই দরের উন্নতি হলেও তা স্থায়ী হচ্ছে না। এতে একদিকে যেমন দরপতনের আতঙ্ক থেকে বের হতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা, অন্যদিকে দেখছেন লোকসানের মুখ।
দেশের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগের জায়গা পুঁজিবাজার। অনেক মানুষের জীবন-জীবিকা এটার ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে। লাভের আশায় বিনিয়োগ করে দরপতনের কারণে বিপুল লোকসান হয়েছে অনেকের। তারা যদি উৎসাহ হারায় বা লাভবান না হয় তবে সার্বিক বিনিয়োগ কমে আসবে। আর বিনিয়োগ কমলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়বে। এছাড়া অসাধু-লোভী সিন্ডিকেটের কারসাজিতে দরপতনের ঘটনা ঘটার বিষয়টিও সমীচীন নয়। একই সঙ্গে, লাভ না হলেও বিনিয়োগকারীরা যেন অন্তত ক্ষতির সম্মুখীন না হয় সে ব্যবস্থা পুঁজিবাজারে থাকা উচিত বলে উচিত মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
দেশের দুই বড় পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ। এই দুই বাজারে দরপতনের কারণে লেনদেন কমছেই। কিছুদিন দরের উন্নতি হলেও টানা দরপতনে ঝুঁকিতে রয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ বিনিয়োগকারী। বর্তমান বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য বেশকিছু প্রণোদনা দেওয়ার কথা বলা হলেও বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকটে তা থেকে ফল পাওয়া যাচ্ছে না। তা ছাড়া, পুঁজিবাজারের টাকা লুট করতে শক্তিশালী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য এখনো বিদ্যমান। অসৎদের কাছে পুঁজিবাজার যেন জিম্মি না হতে পারে সেজন্য সরকার বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জকেই এর সমাধান করতে হবে।
ঢাকা এবং চট্টগ্রাম দুই পুঁজিবাজার এমন পদ্ধতিতে চালাতে হবে, যেখানে সাধারণের বিনিয়োগের অর্থ লুটে নেওয়ার সুযোগ থাকবে না। ছোট-বড় যেমন কোম্পানি হোক শেয়ার কিনে যেন কোনো বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে খেয়ালও রাখতে হবে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228