ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

থামছে না দুর্বৃত্তায়ন

লাগাম টেনে ধরুন

সম্পাদকীয়-১
🕐 ৮:৪৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০১৯

একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটেই চলেছে। কখনো প্রকাশ্য দিবালোকে নির্যাতন করে, কখনো গুপ্তবৃত্তির মাধ্যমে। থামছে না খুনের মতো নারকীয় ঘটনা। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ঘাটতি, আইনি প্রক্রিয়ায় জটিলতা এবং অপরাধ করে ফাঁকফোকর খুঁজে পাওয়ায় ধারাবাহিকভাবে নির্মম ঘটনা ঘটছে। সামাজিক বন্ধনের অভাব, অসহিষ্ণু মনোভাব এবং দুর্বৃত্তায়ন এসব কাজের জন্য দায়ী। বরগুনা, চট্টগ্রাম, রাজধানীর ওয়ারী এবং সম্প্রতি কুমিল্লাসহ এমন ঘটনার অভাব নেই। অথচ রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা, নীতি-নৈতিকতা মেনে দেশপ্রেম-মানবপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হলে নাগরিক জীবনে এ জাতীয় সমস্যা থাকার কথা নয়। তারপরও বাস্তবতা হলো, বর্তমান চিত্র এর উল্টো।

বিগত কয়েক মাসের খবরে দেখা যায় খুনের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে শারীরিক নির্যাতন শেষে হত্যা, ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা, অপহরণ করে হত্যার শিকার হয়েছেন অনেকেই। বরগুনার পর কুমিল্লায় নৃশংস কায়দায় খুন হয়েছেন চার জন। প্রশ্ন আসতে পারে, কেন এমন হচ্ছে? বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে যে ঘটনা ঘটেছে, ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে তা দেখেছে দেশবাসী। মানুষ যে দিন দিন নিষ্ঠুর এবং দয়াহীন হচ্ছে তা বোঝাই যাচ্ছে। সহনশীলতার ঘাটতি এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গির অভাবের কারণে এমনটি হচ্ছে। অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়াও একটি বড় কারণ।

খুনের ঘটনাগুলোর বেশির ভাগই ব্যক্তিকেন্দ্রিক অথবা স্বার্থসিদ্ধির জন্য ঘটেছে। সরকার, প্রশাসন এবং বিচারবিভাগের তৎপরতায়ও তা কমছে না। আবার এর দায়ভারও কোনোভাবেই এড়াতে পারে না রাষ্ট্রযন্ত্র। এক শ্রেণির মানুষকে সুবিধা দিতে গিয়ে অন্যশ্রেণিকে বঞ্চিত করলে জন্মায় শত্রুতা। এমনটিও হচ্ছে কোনো কোনো ক্ষেত্রে। মানবতা, সংস্কৃতির চর্চার অভাবেও মানুষের মধ্যে থেকে নৈতিকতা লোপ পাচ্ছে। যে কারণে, অনেক সাধাসিধে মানুষ গুরুতর অপরাধের শিকার হচ্ছেন। কথা হচ্ছে, আর কত? এভাবে একদিকে যেমন দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে অন্যদিকে মানুষ সামাজিক বলয়ের বাইরে চলে যাচ্ছে। এগুলো যে কল্যাণ রাষ্ট্রের বিরোধী তাও বুঝতে চেষ্টা করছে না কোনো পক্ষই।

বাঙালি সংস্কৃতি হাজার বছরের পুরনো এবং ভাবগাম্ভীর্যে পূর্ণ। রয়েছে সহিষ্ণুতার দৃষ্টান্ত। রাষ্ট্রযন্ত্র হিসেবে আমাদের সরকার-প্রশাসন যথেষ্ট শক্তিশালী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও আধুনিক, আইন এবং বিচার ব্যবস্থাও স্বচ্ছ। এরপরও দেশের মাটিতে খুন-ধর্ষণের মতো ঘটনা মেনে নেওয়ার মতো নয়। রাষ্ট্রের নাগরিকের ভালো মন্দ সবকিছুর দায়িত্ব রাষ্ট্রযন্ত্রের। এই কাঠামো এবং সামাজিক বলয়ে অবক্ষয় দেখা দিলে কোনোভাবে দুর্বৃত্তায়ন রোধ সম্ভব নয়। সাম্প্রতিককালে যা হচ্ছে তাও অপ্রত্যাশিত। সুস্থ ধারার সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক চর্চা এবং পারিবারিক মিলবন্ধন দৃঢ় করে করেই দুর্বৃত্তায়ন রোধ করা সম্ভব। তাই সবার নিরাপত্তা, অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ, গুম-খুন-ধর্ষণ শূন্যে নামানো এবং নাগরিক নিরাপত্তায় রাষ্ট্রযন্ত্রকে আরও তৎপর হতে হবে, লাগাম টেনে ধরতে হবে দুর্বৃত্তায়নের।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper