ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরের মহাপ্রয়াণ

জীবনাদর্শ ও কর্ম হোক পাথেয়

সম্পাদকীয়
🕐 ৯:২৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০১৯

সাংবাদিক ও সাংবাদিকতার শিক্ষক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গত মঙ্গলবার রাত ১২টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। বরেণ্য এ সাংবাদিক দীর্ঘদিন মাইলো ফাইব্রোসেস (রক্তের ক্যান্সার) রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তার মৃত্যুতে জাতি হারাল দায়িত্বশীল একজন অভিভাবককে। আনুমানিক ১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণকারী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর ১৯৭০ সালের শুরুতে সাংবাদিকতা শুরু করেন। শুরুটা প্রিন্ট মিডিয়ায় হলেও পরে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পদার্পণ করেন ইলেকট্রনিক মিডিয়ায়। সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলেও ছিল অবাধ বিচরণ। ছিলেন নাচের সংগঠন নৃত্যাঞ্চল ড্যান্স কোম্পানির সমন্বয়ক, আন্তর্জাতিক থিয়েটার ইনস্টিটিউট (আইটিআই) বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের নির্বাহী কমিটির সদস্য।

সাংবাদিক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরের বড় ভাই গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ ইউনুস এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের সাবেক শিক্ষক মুহাম্মদ ইব্রাহীম। প্রত্যেকেই দেশবরেণ্য। গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা বিষয়ে মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর লিখেছেন ২৫টি বই। সাংবাদিকতার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বইগুলোকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করেন। নানাভাবেই তিনি নিজেকে ছড়িয়ে রেখেছিলেন, ব্যাপৃত রেখেছিলেন কর্মে।

নানাভাবেই রেখেছেন পথিকৃতের ভূমিকা। বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশনের অবিচ্ছেদ্য অংশ টকশো। এ ধরনের অনুষ্ঠানের শুরুর দিকে ছিলেন নির্দেশকের ভূমিকায়। টেলিফোনে দর্শক-শ্রোতা মন্তব্য যুক্ত হয়েছে তার হাত ধরেই। নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের লাইভ আলোচনা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করতেন। বর্তমানে টকশোতে নানা দল-মতের অসহিষ্ণু বক্তব্য ও অবস্থান দেখা যায়। অনেক সময়ই শিষ্টাচার ভঙ্গ করে পরস্পরকে আক্রমণ করা হয় নানাভাবে। এদিকে মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর ছিলেন নির্মোহ আলোচক, সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের দিক-নির্দেশনা প্রদান করতেন। অন্যকে আহত না করেও অবিচলভাবে বক্তব্য তুলে ধরতেন। ‘প্রতিপক্ষ’কে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করেননি কখনোই।

একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিষয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করা মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। প্রকাশনা ও সাংবাদিকতায় ছিল তার অনন্য ভূমিকা। নানা গুণের সমাবেশে হয়ে উঠেছিলেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর নেই, রেখে গেছেন চিন্তার লিখিত রূপ। বলে গেছেন যুক্তিনিষ্ঠ নানা কথা। এ বুদ্ধিজীবীর জীবনাদর্শ ও কর্মকে পাথেয় করতে পারলে আমরা এগিয়ে যাব অনেক দূর। তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি। সংশ্লিষ্টরা তার সৃজন-মননের সম্ভার সংরক্ষণে এবং সাধারণের হাতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবেন বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper