শিশু সায়মাও ধর্ষণের শিকার
ব্যবস্থা নিতে হবে এখনই
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:১৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ০৭, ২০১৯
ফুটফুটে শিশুর দিকেও যে মানুষ লোলুপ দৃষ্টি দেয় সে পশু সমতুল্য। রাজধানীর ওয়ারীতে মাত্র সাত বছর বয়সী নিষ্পাপ সামিয়া আফরিন সায়মাও বর্বরের কবল থেকে রক্ষা পেল না। শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হলো নিষ্পাপ সায়মাকে। বর্তমান পরিস্থিতি এমন, খুন-ধর্ষণ এখন প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়াচ্ছে। দিন দিন এর মাত্রা না কমে বরং বাড়ছেই। শিশু-কিশোরী, তরুণী-যুবতী, বিবাহিত-অবিবাহিত; তালিকার বাইরে নেই কেউ। এ জাতীয় অসংখ্য কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, নারী-শিশুরা কোথাও নিরাপদে নেই।
পুরান ঢাকার ওয়ারীতে একটি নির্মাণাধীন ভবনে নির্যাতনের পর নির্মমভাবে হত্যা করা হয় নার্সারিপড়ুয়া সায়মাকে। বাবা ব্যবসা এবং মা ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকায় খেলতে গিয়ে আর ফেরত এলো না সে। কে নেবে এই অপূরণীয় ক্ষতির দায়? সমাজে ভালো মানুষের সঙ্গে আগাছাও রয়েছে। এরা দিনে দুপুরে, রাতের আঁধারে কিংবা নির্জন নির্মাণাধীন ভবনে জঘন্যতম অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে অপরাধী ধরা পড়ে আবার থেকে যায় অধরাও। এতে করে হয় না বিচার। এভাবেই চলছে। কিন্তু, যা করলে অপরাধ বন্ধ হবে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
পত্রিকার পাতা, টেলিভিশনের খবরে সায়মার চেহারা দেখে বুকটা কেঁপে উঠছে বারবার। জন্মাচ্ছে আক্ষেপ। মানুষ দিন দিন পশুর থেকেও খারাপ হচ্ছে। খাওয়া-পরা দিয়ে একটা ভয়ংকর পশুকেও পোষ মানানো সম্ভব। কিন্তু, অপরাধীদের তা কখনই সম্ভব নয়। তাই, অপরাধ অনুযায়ী কঠিন শাস্তি দেওয়া উচিত এখনই। সায়মা জীবিত থাকলে সারা জীবন এর ক্ষত বহন করে বেড়াতে হতো। প্রশ্ন জাগে, যারা ধর্ষণ-নির্যাতনের শিকার হয়ে জীবিত থেকে বিচার দাবি করেন, তাদের কথা কে বা কারা ভাবছেন? আর কারাই বা এর সুরাহা করতে পারবে?
বেশির ভাগ ধর্ষণ-নির্যাতনের মামলার রায় বা শাস্তির খবর প্রকাশ পায় না। যাও পায় তাও পুরনো ঘটনা। অনেক ক্ষেত্রেই মামলার তদন্তে দীর্ঘসূত্রতা এবং আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যায় অপরাধীরা। ইদানীং দেখা যায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হচ্ছে অনেক ধর্ষণ মামলার আসামি। অথচ এই কাজ বন্ধে তেমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যাচ্ছে না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গণমাধ্যমে এ নিয়ে তোলপাড় উঠলেও সরকারি উদ্যোগ, প্রশাসনের নির্ভরযোগ্য আশ্বাস কিংবা বিচার বিভাগেরও তেমন তৎপরতা দেখা যায় না। উল্টো, যারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তাদের মামলা, বিচার, জিজ্ঞাসাবাদ, তদন্তের নামে আরও হয়রানি হতে হচ্ছে। আমরা চাই, অল্প সময়ের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধ প্রমাণিত হলে দোষীদের এমন শাস্তি দিতে হবে যা দেখে আঁতকে উঠবে অন্য পশুরা।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228