ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অর্ধেক শিশুর জন্ম সিজারে

‘প্রয়োজন’ ভেবে দেখতে হবে

সম্পাদকীয়
🕐 ৯:১৬ অপরাহ্ণ, জুন ২২, ২০১৯

এককালে প্রযুক্তির ব্যবহার না থাকায় প্রসূতি মায়েরা স্বাভাবিকভাবেই গর্ভের শিশু জন্ম দিতেন। বর্তমানে চিকিৎসাবিদ্যার উন্নয়নে সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিচ্ছেন অনেকেই। এতে যেমন মায়েরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন তেমনি শিশুরও নানাবিধ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বাংলাদেশে এই প্রক্রিয়ায় জন্মদান আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে। এ আমলে অনেক চিকিৎসকই সিজারের মাধ্যমে শিশু জন্ম দিতে মায়েদের অনুপ্রাণিত করেন। এতে শারীরিক সমস্যাসহ অর্থের দিক দিয়েও ক্ষতি হচ্ছে সাধারণের। একদিকে যেমন প্রাকৃতিক উপায়ে সন্তান জন্মদান কমছে, অন্যদিকে এই প্রবণতা বেড়ে মায়েদের বিভিন্ন দিকে স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিচ্ছে।

খোলা কাগজের এক প্রতিবেদন উঠে এসেছে, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৫১ শতাংশ শিশু সিজারের মাধ্যমে ভূমিষ্ঠ হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেই সিজার পদ্ধতিতে জন্মদানের হার বেশি। তাছাড়া, ব্যবসায়িক দিক বিবেচনা করেও অনেক ডাক্তার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশে সিজার করেন। আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ বলছে, গত বছর বাংলাদেশে যতগুলো সিজার হয়েছে গড়ে প্রত্যেক শিশুর জন্ম দিতে খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকার বেশি। আর বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেই প্রায় ৮০ শতাংশ প্রসূতিকে সিজার করা হয়েছে। বিষয়টি আশঙ্কাজনক বটে।

একদিকে স্বাভাবিক পদ্ধতিতে জন্মদান কমছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও খরচের পরিমাণ বাড়ছে। অর্থাৎ সিজারে উভয়দিকে সাধারণের ক্ষতি হচ্ছে। তাছাড়া, নিরাপদভাবে সন্তান জন্ম দিতেও পরিবারগুলো সিজারের দিকেই ঝুঁকছে। ডাক্তার-হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও প্রসূতি এবং তার পরিবারকে সিজারে অনুপ্রাণিত করছেন। এর ফলে শিশুর জন্মের সময় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি থাকছে, হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, অনেক ক্ষেত্রেই শিশুর অঙ্গহানিও ঘটছে। সব মিলিয়ে সুস্থ-সবল মায়েদের সিজার করার ফলে যে পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে তা সারিয়ে তুলতেও অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

আমরা জানি, মা ও গর্ভের শিশুর সমস্যা দেখা দিলে তখনই কেবল সিজারের প্রয়োজন পড়ে। চিকিৎসা বিজ্ঞানেও এমনই বলা আছে। কিন্তু বর্তমানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের ডাক্তার ও হাসপাতালের কর্মকর্তারা এই তত্ত্ব মানছেন না। সন্তান জন্মদানে বিভিন্ন জটিলতা এবং মাতৃমৃত্যু কমাতে সিজার প্রক্রিয়া শুরু হলেও উপকারের বদলে ক্ষতিই হচ্ছে বেশি। তাই এখনই সময়, সত্যিকারের ‘প্রয়োজন’ ভেবে দেখতে হবে সিজারের ক্ষেত্রে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper