ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রোহিঙ্গা সংকটে নাজুক পরিস্থিতি

প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ কাম্য

সম্পাদকীয়
🕐 ৯:৩৩ অপরাহ্ণ, জুন ১৯, ২০১৯

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর ব্যাপক দমন-নিপীড়ন চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। এ অমানবিক পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে তখন দেশটি থেকে প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে থাকে রাখাইনের অধিবাসী রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গা শরণার্থী গ্রহণে বাংলাদেশ প্রথমে নিমরাজি থাকলেও পরে মানবিক বিবেচনায় আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়। পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা।

এর আগে থেকেই বাংলাদেশে ছিল প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা। বর্তমানে মোট ১১ লাখ রোহিঙ্গার ভারে পিষ্ট হচ্ছে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানে মিয়ানমার সরকার একাধিকবার চুক্তি করলেও শেষ পর্যন্ত দেশটির সদিচ্ছা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। জাতিসংঘসহ বিশ্বের পরাশক্তিগুলোকে দিয়ে বাংলাদেশ চাপ প্রয়োগ করার চেষ্টা করলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের ভূমিকা যে ছিল ঠুঁটো জগন্নাথের মতো, সম্প্রতি জাতিসংঘের অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিষয়টি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-২০১৭ সালে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সেনা হামলার ঠিক আগে সম্মিলিত ব্যবস্থাপনার অভাব এবং নিরাপত্তা কাউন্সিলের সমর্থন না পাওয়ায় পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যর্থ হয় জাতিসংঘ। মিয়ানমারের অভিযানে বহু হত্যা, গণধর্ষণ ও প্রচুর ঘরবাড়ি পোড়ানো হয়েছে। অথচ করণীয় নির্ধারণে সময়োপযোগী সিদ্ধান্তই নিতে পারেনি জাতিসংঘ।

২০১০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মিয়ানমারে জাতিসংঘের ভূমিকার পর্যালোচনার প্রতিবেদনে বলা হয়-রোহিঙ্গা পরিস্থিতির মোকাবেলার ক্ষেত্রে ভুল হয়েছে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কোনো নির্দিষ্ট পরিকল্পনা না করে খাপছাড়া কৌশল অবলম্বন করায় মিয়ানমারের পরিস্থিতি মোকাবেলা করার সুযোগ হারিয়েছে জাতিসংঘ।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অনাকাক্সিক্ষত উপস্থিতিতে উজাড় হচ্ছে কক্সবাজারের বন-পাহাড়। সেখানকার স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে রোহিঙ্গার নীরব ও সরব দ্বন্দ্ব বাড়ছে প্রতিনিয়তই। যে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল রোহিঙ্গাদের, নিজ দেশের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে রোহিঙ্গাদের বিরোধ প্রকাশ্য হতে শুরু করেছে তাতে করে এ মানবিকতা সত্যিকার অর্থে কী ফল বয়ে আনতে পারে তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা কল্পনা। অপরাধপ্রবণ রোহিঙ্গারা ইতোমধ্যেই জড়িয়ে গেছে নানা অপরাধ ও অপকর্মে। শ্রমবাজারে এরা কম টাকায় শ্রম দেওয়ায় স্থানীয়রা কাজের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সরকারের আত্মমূল্যায়নের সময় এসেছে। বস্তুত বিষয়টি এমন জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে-গেলার সুযোগ যেমন নেই, তেমনি উগড়ানোরও। এ দোটানা থেকেই বেরিয়ে আসতে হবে দেশের স্বার্থে। রোহিঙ্গা আশ্রয়ের মধ্য দিয়ে যদি দেশ, দেশের মানুষই ক্ষতির শিকার হতে থাকে তাহলে এ মানবিকতার সত্যিকার অর্থে কী উপকারে লাগবে-খতিয়ে দেখতে হবে তাও!

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper