ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

তিতাসে দুর্নীতির মহোৎসব

অনতিবিলম্বে লাগাম টানুন

সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:২৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৮, ২০১৯

মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাস নিয়ে আমাদের দেশে দুর্নীতি-অনিয়ম এক রকম ‘ওপেন সিক্রেট’। এত দিন বিষয়টি নিয়ে গবেষণা চললেও এবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির দুর্নীতি চিহ্নিত করেছে। অবৈধ সংযোগ, মিটার জালিয়াতিসহ তিতাস গ্যাস কোম্পানির বেশির ভাগ খাতেই দুর্নীতি খুঁজে পেয়েছে দুদক। দেশের সম্পদের উৎকৃষ্ট ব্যবহার তো নয়ই বরং তিতাস কোম্পানির কতিপয় অসাধু-দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীই ‘পুকুর চুরি’ করেছে। যেহেতু তিতাসের দুর্নীতির খবর দুদক এবার প্রকাশ করেছে, তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রতিষ্ঠানটির দিকে কড়া নজর রাখতে হবে।

বছরের পর বছর দেশের জাতীয় সম্পদ, জনগণের সম্পদ গ্যাস নিয়ে নানা টালবাহানা করছে তিতাস। খোলা কাগজ বলছে, দুদকের দুর্নীতি সংক্রান্ত প্রাতিষ্ঠানিক টিমের অনুসন্ধান, পর্যবেক্ষণ এবং প্রতিবেদনের তথ্যে তিতাসের ২২ খাতে দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে। দুদকের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর সরকার সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন লোকজন বলছেন, ‘দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকার কঠোর অবস্থানে আছে। দুর্নীতিবাজরা ছাড় পাবে না।’ তিতাসে দুর্নীতি করা ‘রাঘব-বোয়াল’দের আসলেই আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে আছে সাধারণ জনতা। যদিও তিতাসের দুর্নীতি প্রতিরোধে ১২ দফা সুপারিশও করেছে দুদক। এখন দেখার বিষয় সুপারিশগুলো কতটুকু সফল হয়।

বিগত কয়েক বছর আমরা দেখছি, দেশের যেসব অঞ্চলে সংযোগ রয়েছে সেখানেই গ্যাসের সংকট। রাজধানীতে এ অবস্থা ভয়াবহ। এবার দুদকের প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে আসল তথ্য। অবৈধ সংযোগ দেওয়ার মাধ্যমে তিতাসে সবচেয়ে বড় জালিয়াতি হয়। কেউ নতুন সংযোগের আবেদন করলেও সহজে তা অনুমোদন না পাওয়া। মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেও রাতের আঁধারে পুনঃসংযোগ দেওয়া হয়। এ ছাড়াও তিতাসের প্রায় প্রতিটি কাজেই রয়েছে অবৈধ লেনদেন অর্থাৎ ঘুষবাণিজ্য।

আমাদের সরকারপ্রধান দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা দিয়েছেন। র‌্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও ভীষণ তৎপর। তাই আশা করা যায়, এবার তিতাসের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকা অসৎ-দুর্নীতিগ্রস্তদের খুঁজে বের করা হবে। কোনোভাবেই যেন দুর্নীতিগ্রস্তরা আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে, তাও খেয়াল রাখতে হবে। আমরা বলতে চাই, শুধু তিতাস নয়, বরং প্রতিটি সরকারি, আধা সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু নজরদারি রাখতে হবে যেন তারা কোনো প্রকার দুর্নীতি-অনিয়ম, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে। একই সঙ্গে যাদের দুর্নীতি প্রমাণ হবে তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যত দ্রুতসম্ভব তিতাসের দুর্নীতিরোধ করে প্রাকৃতিক গ্যাস রক্ষা করতে হবে, এটাই প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper