ব্যাংক আমানতে এগিয়ে শহরবাসী
গ্রামের দিকেও নজর দিতে হবে
সম্পাদকীয়
🕐 ৯:১১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৮, ২০১৯
আমাদের দেশের সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। ব্যাংক খাতের অবস্থাও সুবিধাজনক পর্যায়ে নেই। প্রবৃদ্ধি অর্জনে দেশ এগিয়ে থাকলেও এখনো অর্থনীতিতে কিছু সমস্যা রয়েই গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ব্যাংকে টাকা রাখার ক্ষেত্রে এবার নতুন তথ্য পাওয়া গেল। মেগাসিটি ঢাকা এবং এর পার্শ্ববর্তী শহুরগুলোর আমানত (ব্যাংকে জমা রাখা টাকা এবং সম্পদ) সারা দেশের মানুষের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ। সারা দেশের মানুষ যে পরিমাণ অর্থসম্পদ ব্যাংকে সঞ্চয় করেন তার তিন ভাগের দুই ভাগই রয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের শহরগুলোয়। অথচ এর বাইরে গ্রামাঞ্চলেই রয়েছে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের জীবন-জীবিকা।
ইতোমধ্যে রাজধানী শহরকে কেন্দ্র করে দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা গড়ে উঠেছে। এখানে আয়-রোজগারের পথও অনেক। ফলে ব্যাংকে আমানতও বেশি। জেলা শহর পর্যায়ে আমানতের পরিমাণ বেশি থাকলেও গ্রামীণ এবং প্রত্যন্ত এলাকায় এর পরিমাণ অনেক কম। খোলা কাগজের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জেলা এবং বিভাগীয় শহরগুলোর ব্যাংকে আমানত শতকরা ৯০ ভাগ, যেখানে গ্রামে মাত্র ১০ ভাগ। এতে বোঝা যায়, শহরকে কেন্দ্র করেই অর্থসম্পদ বেশি নাড়াচাড়া হচ্ছে। সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ও কর্মসংস্থান বেশি হওয়া শহরকে কেন্দ্র করেই যেন গড়ে উঠছে সব।
আমরা জানি, ব্যাংকিং খাতেই মানুষের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা নির্ভর করে। অথচ এখানে বিদ্যমান অনিয়ম-দুর্নীতি এবং খেলাপি ঋণ না কমালে দেশের প্রবৃদ্ধি যতই হোক না কেন, প্রকৃত উন্নয়ন হবে না। গ্রামীণ এবং প্রত্যন্ত এলাকা মানুষকে সঙ্গে না নিয়ে শুধু শহরমুখী অর্থনৈতিক উন্নয়নও দেশের জন্য সুফল বয়ে আনবে না। এতে করে দিনে দিনে শহরেই বেশির ভাগ সম্পদ পুঞ্জীভূত হবে। গ্রামের মানুষগুলো অর্থাভাবে আরও পিছিয়ে পড়বে। এটি যে এক ধরনের ‘বৈষম্য’ তা বলাই বাহুল্য। তাই ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতিটি সুবিধা সারা দেশের জনগণের দ্বারগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে।
এর আগেও গণমাধ্যমের খবরে আমরা দেখেছি, দেশের বিপুল পরিমাণ সম্পদ অল্প কিছু মানুষের হাতে রয়েছে। এ ছাড়া অতিধনীর সংখ্যাও কম নয়। দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে হলে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। আমরা বলতে চাই, শহরকেন্দ্রিক এত বিপুল পরিমাণ আমানত সারা দেশে, বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করা হলে সবাই এর সুফল পাবে। সেই সঙ্গে আমানতকারীও লাভবান হবে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228