ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সুদানে আন্দোলন-বিক্ষোভ অব্যাহত

গণতান্ত্রিক সরকারের অপেক্ষায় নাগরিক

সম্পাদকীয়
🕐 ৯:৩৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৩, ২০১৯

আফ্রিকার দেশ সুদানে কয়েক মাসের টানা বিক্ষোভ-আন্দোলনে দীর্ঘ ৩০ বছরের একনায়কতান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটাল জনগণ। এরপর সামরিক কর্তৃপক্ষ দেশটির শাসন ক্ষমতা হাতে নিলে জনগণ তাও মেনে নেননি। জনরোষের একপর্যায়ে সামরিক বাহিনীও দেশ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ত্যাগ করে। এ পর্যায়ে সুদানের আপামর জনতা চাইছেন দেশ গণতান্ত্রিক শক্তির হাত দিয়ে চলুক। গত বছরের ডিসেম্বরে তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় শুরু হয় বিক্ষোভ। আন্দোলন চলাকালে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু, যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা ছাড়ছে না দেশটির নাগরিকরা।

গণমাধ্যম বলছে, ১৯৮৯ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত টানা ক্ষমতায় ছিলেন সেদেশের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশির। তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগও রয়েছে। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট বশির ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করার পর ক্ষমতা নেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী আউয়াদ ইবনে আউফ। এক পর্যায়ে তিনিও দেশে বিদ্যমান অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, অবিচার এবং সামাজিক বৈষম্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করেন।

এদিকে সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিভাজন ও মতবিরোধের ফলে সুদানে আধুনিক কালের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। এরই ফল হিসেবে সুদানের নাগরিকরা দেশের শাসনব্যবস্থা জনগণের হাতে চাইছেন। বশিরের পদত্যাগের পর আউফ ক্ষমতায় গেলেও অসন্তুষ্ট নাগরিকরা তাকেও পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছেন। এমন পর্যায়ে সুদানের ভবিষ্যৎ এগিয়ে চলেছে অনিশ্চয়তার দিকে।

তবে যে যাই বলুক বা চিন্তা করুক, সুদানের বর্তমান পরিস্থিতি কাটিয়ে একটি জাতীয় ঐক্য এবং শান্তি শৃঙ্খলা কার্যকর এখন সময়ের দাবি। কেননা, রাষ্ট্রের মূল ক্ষমতা যে জনগণের হাতে তারই প্রমাণ দিল উত্তর আফ্রিকার বৃহত্তম দেশ সুদানের নাগরিকরা। সুদান পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস, স্বর্ণ, রূপাসহ গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ। সারা বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির তালিকায়ও উল্লেখযোগ্য স্থানে সুদান। অথচ, একনায়কতন্ত্র এবং দুর্নীতি-অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার কারণে প্রবৃদ্ধি বেশি হলেও এগোতে পারছে না দেশটি।

উৎপাদনে উচ্চ প্রবৃদ্ধি থাকা সত্ত্বেও এখনো সেদেশে অর্থনৈতিক সমস্যা চলমান। তিন দশক ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগের পর সুদানের নতুন ক্ষমতা কার হাতে দেওয়া হবে তা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সবাই তাকিয়ে আছে সুদান পরিচালনায় নিয়োজিত নতুন মুখের অপেক্ষায়। সবকিছু ছাপিয়ে সব বিক্ষোভ-আন্দোলন অবসানের মাধ্যমে যেন যোগ্য নেতৃত্ব সুদান পরিচালনার দায়িত্ব পায়, এটাই বিশ্ববাসীর প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper