শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন
সম্পাদকীয়-১
🕐 ১০:৩০ অপরাহ্ণ, মার্চ ২০, ২০১৯
এমন কোনো দিন নেই যেদিন দেশের কোনো না কোনো সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে না। কখনো বেপরোয়া গাড়ি চালনায় আবার কখনো পথচারীদের অসতর্কতার কারণে মুহূর্তে প্রাণ যাচ্ছে সাধারণের। অনেক আগে থেকেই নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন শুরু হলেও প্রেক্ষাপট বলছে তার উল্টো। অপ্রিয় হলেও সত্য, যত দিন যাচ্ছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। বছরখানেক আগে এক দুর্ঘটনায় একাধিক শিক্ষার্থীর প্রাণ গেলে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাস্তায় নামে শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি আবারো প্রাণ ঝরল এক শিক্ষার্থীর।
গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের মাঝামাঝিতে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় সড়কে দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় রাজধানীসহ সমগ্র দেশেই নিরাপদ সড়কের দাবিতে তুমুল আন্দোলন হয়। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে অচল হয়ে পড়ে ঢাকা। দাবি ওঠে নতুন আইনের। সে সময় কর্তৃপক্ষের আশ্বাস এবং সাধারণের ভোগান্তির বিষয়টি মাথায় নিয়ে সড়ক ছাড়ে শিক্ষার্থীরা। এবার রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বাসের রেষারেষিতে প্রাণ গেল এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের। ফলে নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজধানীসহ সারা দেশের শিক্ষার্থীরা আবার আন্দোলনে নেমেছে। আর এতেই অচল হয়ে পড়েছে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীরা বলছে, তাদের যৌক্তিক দাবি আগে মানতে হবে, এরপরই তারা রাস্তা ছাড়বে।
এ কথা সত্য, এখনো রাজধানীর বেশির ভাগ রুট বাস চলাচলের অনুপযোগী। অনেক চালকের নেই লাইসেন্স। বাসে বাসে অসুস্থ প্রতিযোগিতাও বিদ্যমান এবং এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের হেলাফেলা, গাফিলাতি বা শৃঙ্খলার অভাবও সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। দুর্ঘটনার সঙ্গে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিতেও নেই তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ। ট্রাফিক আইন মানার প্রবণতাও অনেক কম। এছাড়া সড়ক পরিবহনের শ্রমিকদের শক্তিশালী সংগঠন থাকার কারণে তাদের ব্যাপারে অনেকটাই উদাসীন নিয়ন্ত্রনকারী কর্তৃপক্ষ। যে কারণে, ক্ষমতার জোরে গাড়ির চালক এবং মালিক পক্ষ মনে করে তাদের রুখে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই। আর এতেই সবটুকু ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ মানুষ।
স্বাধীনতার অনেক আগে থেকে দেশের কল্যাণের জন্য প্রতিটি দাবি আদায়ে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছাত্রসমাজ। শুধু তাই নয়, ইতিহাস বলছে, প্রাণ বিসর্জন দিয়েও তারা দাবি আদায় করেছে। এবারও সেই একই ধারাবাহিকতায় সড়ক দুর্ঘটনায় অকালে প্রাণ ঝরা রুখতে মিলিত হয়েছে শিক্ষার্থীরা। আমরাও চাই, ছাত্রসমাজের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। কেননা, এর দায়ভার দেশ পরিচালনায় নিযুক্ত সরকার, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই নিতে হবে। যে কাজটি করতেই হবে তা এখনই শুরু করা হোক।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228