ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ
কঠোর আইনসহ সুষ্ঠু নজরদারি প্রয়োজন
সম্পাদকীয়
🕐 ৯:১৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৫, ২০১৯
আমাদের দেশের ওষুধশিল্প অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে। পৃথিবীর অনেক দেশেই আমরা ওষুধ রপ্তানি করি। প্রায় সব রোগের ওষুধ প্রাপ্তিতে আমাদের ভোগান্তি নেই বললেই চলে। কিন্তু জীবন রক্ষাকারী এ ওষুধও নিরাপদ থাকছে না। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলছে, দেশের ৯৩ ভাগ ফার্মেসিতে (ওষুধের দোকান) মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি হয়। দেশের আপামর জনগণের জন্য বিষয়টি ভয়ংকর এবং বিপজ্জনক বটে। কেননা, খুব জরুরি প্রয়োজনে ফার্মেসি থেকে ওষুধ সংগ্রহ করে দেখা গেল তার মেয়াদ নেই। মেয়াদহীন ওষুধ মানে ‘বিষ’। তবে কি প্রায় সব ওষুধের দোকানেই বিষ বিক্রি হয়?
দৈনিক খোলা কাগজের প্রতিবেদনে জানা যায়, বাজার তদারকি করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ প্রায় সব ওষুধের দোকানেই মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের সন্ধান পেয়েছে। শুধু তাই নয়, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার দায়ে জরিমানা এবং মালিকপক্ষকে সচেতন করতে সভাও করা হয়েছে। কিন্তু, অতিরিক্ত মুনাফার লোভে বেশিরভাগ ফার্মেসিতেই বিক্রি হচ্ছে মেয়াদহীন ওষুধ। রোগ থেকে মুক্তি পেতে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। অথচ থেমে নেই মানুষ মারার এই ব্যবসা।
দেশীয় বাদ দিয়ে বিদেশ থেকে আমদানি করা দামি এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধগুলোরও বেচাকেনা চলছে দেদার। রাজধানীসহ দেশের উল্লেখযোগ্য পাইকারি এবং খুচরা ওষুধের বাজারগুলোতেও এই ব্যবসা জমজমাট। আমদানি করা ওষুধগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে কতিপয় ‘সিন্ডিকেট’ আমদানিকারকের স্টিকার তুলে তা বাজারজাত করছে, যা প্রকাশ্যেই হচ্ছে বলা চলে। দেশের আইন-আদালতকে এক রকম বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েই চলছে মানুষ মারার এই ব্যবসা। প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা জরিমানা করে এবং মামলা দিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না মুনাফালোভীদের। দেশের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে এটি যে একটি বড় রকমের বাধা তা বলাই বাহুল্য।
আমরা বলতে চাই, দেশের নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে চিকিৎসা ও স্বাস্থসেবা নিশ্চিত করতে হলে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপের বিকল্প নেই। যেহেতু মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি এক রকমের দুর্নীতি তাই এ বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ যেন কোনোভাবেই দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ছড়াতে না পারে সে বিষয়েও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত নজরদারি চালাতে হবে। সম্ভাবনাময় এই শিল্পের হাত ধরে দেশের অর্থনীতির চাকা আরো সচল হবে, তাই বিষয়টির বিশেষ তাৎপর্য বিশ্লেষণ করতে হবে এবং এতে বিলম্ব করা চলবে না। এটাই দাবি।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228